shono
Advertisement

সুখী গৃহকোণের ভরসা ‘পূর্তি’, রইল নানা খুঁটিনাটি

কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-এ বেশ কিছু বড় কর সংস্কার আনা হয়েছে, যা আবাসন ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 08:10 PM Mar 14, 2025Updated: 08:57 PM Mar 14, 2025

রিয়েল এস্টেট বরাবরই বাজার অর্থনীতিতে চর্চার বিষয়। বর্তমানে নীতি সংস্কার এবং খুচরো বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান সামর্থ‌্য রিয়েল এস্টেটের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করছে। মত পূর্তি রিয়েলটির ম‌্যানেজিং ডিরেক্টর মহেশ আগরওয়ালের

Advertisement

সাম্প্রতিক সময়ে রিয়েল এস্টেট ক্রমশই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। নীতিগত পরিবর্তন, অর্থনৈতিক পদক্ষেপ আর বাজারের গতিপথ বদলের ফলে এই পরিবর্তন এসেছে। মানুষের ক্রমবর্ধমান আয় এর সাথে নিজের বাড়ির মালিক হওয়ার ইচ্ছেও বাড়াছে—ফলে মধ্যবিত্ত ক্রেতারাও এখন রিয়েল এস্টেট বাজারে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন, যা এই ক্ষেত্রকে আরও এগিয়ে নিচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-এ বেশ কিছু বড় কর সংস্কার আনা হয়েছে, যা আবাসন ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। নতুন কর ব্যবস্থায় বার্ষিক আয়করে ছাড়ের সীমা ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা মধ্যবিত্তদের জন্য বড় স্বস্তি এনেছে এবং বাড়ি কেনার স্বপ্নকে আরও বাস্তবসম্মত করেছে। এছাড়া, এখন থেকে বাড়ির মালিকরা দুইটি সম্পত্তিকে ‘স্ব-অধিকৃত’ (self-occupied) হিসেবে ঘোষণা করতে পারবেন, যদি এর মধ্যে কোনওটি ভাড়া দেওয়া না হয়। এর ফলে, দুইটি সম্পত্তির ক্ষেত্রেই শূন্য মূল্যায়ন (nil valuation) দাবি করা যাবে। এই নিয়ম ভাড়ার বাড়ির বাজারকে চাঙ্গা করতে পারে, কারণ এটি সম্পত্তির মালিকদের জন্য কর ছাড়ের সুযোগ তৈরি করবে।

এছাড়াও, ভাড়া থেকে আয়ের ক্ষেত্রে টিডিএস কাটার সীমা ২.৪ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৬ লাখ টাকা করা হয়েছে, যা বাড়ির মালিকদের করের বোঝা কমাবে এবং ভাড়ার বাড়িতে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়াবে। এই সব উদ্যোগ, আবাসনের সুযোগ আরও বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মুদ্রানীতি রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতেও বড় ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬.২৫% করেছে, যা মে ২০২০-এর পর প্রথমবার এমন কাটছাঁট করা হল। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা, যাতে ঋণ—বিশেষ করে হোম লোন—আরও সাশ্রয়ী হয়। সুদের হার কমলে বাড়ি কেনার চাহিদা বেড়ে যায়, কারণ কম সুদে ঋণ পাওয়া গেলে মধ্যবিত্ত ও অন্যান্য শ্রেণির মানুষদের জন্য বাড়ির মালিক হওয়া আরও সহজ হয়ে ওঠে। যেহেতু মধ্যবিত্ত শ্রেণিই আবাসন বাজারের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি, তাই এই ধরনের নীতিগত পরিবর্তন রিয়েল এস্টেট খাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রিয়েল এস্টেট-এর এই বৃদ্ধিতে যে সমস্ত রিয়েলটি কোম্পানির অবদান সবচেয়ে বেশি, পূর্তি রিয়েলটি তার মধ্যে অন্যতম অগ্রণী সংস্থা, যা আধুনিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রিমিয়াম হাউজিং সলিউশন নিয়ে আসছে। তাদের বিভিন্ন প্রকল্প গুণমান, নতুনত্ব এবং সহজলভ্যতার প্রতিশ্রুতি ফুটিয়ে তুলেছে। কলকাতার রাজারহাটে ‘পূর্তি অ্যারোমা’ আধুনিক লাইফস্টাইলের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে বাসিন্দারা স্বাচ্ছন্দ্য ও সুবিধার সমন্বয়ে একটি উন্নত জীবনযাত্রা উপভোগ করতে পারবেন। একইভাবে, লেক টাউন-জেসোর রোড সংলগ্ন ‘দ্য ভারান্ডা’ প্রকল্পটি বিলাসিতা ও কার্যকারিতার সুন্দর মিশ্রণ এনে দিচ্ছে, যা পূর্তি রিয়েলটির স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বহন করে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর ‘মেরাকি সামসারা’ সংস্থার একটি ব্যতিক্রমী প্রকল্প, যেখানে ১১ থেকে ২২ কাঠা জমির উপরে বিলাসবহুল ব্যক্তিগত ভিলা দেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্পটিতে ৪ এবং ৬ বিএইচকে লেকসাইড পুল ভিলা রয়েছে, যেখানে ৭৯% খোলা জায়গা রাখা হয়েছে, মোট ৬২টি ভিলা এবং একটি আন্তর্জাতিক মানের রিসর্টের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আরেকটি প্রিমিয়াম প্রকল্প ‘আনায়া’, যা কলকাতার ইএম বাইপাসে অবস্থিত। এটি একটি G+২৩ আবাসিক টাওয়ার ও G+৪ ক্লাব টাওয়ার নিয়ে গঠিত, যেখানে মোট ৯২টি বিলাসবহুল ইউনিট রয়েছে। ৩ এবং ৪ বিএইচকে অ্যাপার্টমেন্টের পাশাপাশি, এই প্রকল্পে আধুনিক জিম, সুইমিং পুল, এবং কমিউনিটি হলের মতো অত্যাধুনিক সুবিধাও উপলব্ধ। পূর্তি রিয়েলটির এই প্রকল্পগুলো তাদের গুণমান, আধুনিক ডিজাইন ও সুবিধার প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটাচ্ছে, যা ক্রেতাদের জন্য একটি অনন্য জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করছে।

খুচরো রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করার অনেক সুবিধা রয়েছে। গত দশকে, ভারতের খুচরো রিয়েল এস্টেট বাজারে বড় পরিবর্তন এসেছে, এবং এখন এটি দেশের বিভিন্ন শহরে হাই স্ট্রিট রিটেল, কমিউনিটি শপিং সেন্টার এবং রিটেল মলের মতো বিভিন্ন ফরম্যাটে সহজলভ্য। খুচরো রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের অন্যতম বড় সুবিধা হল, এটি সাধারণ আবাসিক সম্পত্তির তুলনায় বেশি ভাড়ার রিটার্ন দিতে পারে। এছাড়া, কেউ যদি ভবিষ্যতে নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে একটি রিটেল স্পেস কেনা দীর্ঘমেয়াদে খরচ কমাতে পারে। এটি একদিকে ভাড়ার মাধ্যমে আয় এনে দেয়, অন্যদিকে ভবিষ্যতের জন্য নিজের ব্যবসার উপযুক্ত অবস্থানও নিশ্চিত করতে পারে।

সহায়ক সরকারি নীতি, সক্রিয় মুদ্রানীতি, এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ—এই তিনের সমন্বয়ে রিয়েল এস্টেট খাতের স্থিতিশীল বৃদ্ধির পথ তৈরি হয়েছে। মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ছে, আর ডেভেলপাররাও নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে আসছেন, যা আবাসন বাজারকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে। রিয়েল এস্টেট এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে অন্যতম পছন্দের বিনিয়োগের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, এবং আগামী বছরগুলোতে এই খাতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্তি রিয়েলটি বাজারের পরিবর্তনশীল চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক প্রকল্প তৈরি করার প্রতিশ্রুতি বজায় রেখেছে, যাতে ক্রেতাদের স্বপ্নপূরণ হয়। উন্নতমানের আবাসন প্রদান এবং বিনিয়োগকারী ও বাড়ির মালিকদের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তুলে, সংস্থাটি ভারতের রিয়েল এস্টেট খাতের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সহজলভ্যতা, সাশ্রয়ী মূল্য এবং গুণগত মানের ওপর জোর দিয়ে, পূর্তি রিয়েলটি এই খাতের স্থায়ী বৃদ্ধি ও গতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য প্রস্তুত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সাম্প্রতিক সময়ে রিয়েল এস্টেট ক্রমশই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
  • নীতিগত পরিবর্তন, অর্থনৈতিক পদক্ষেপ আর বাজারের গতিপথ বদলের ফলে এই পরিবর্তন এসেছে।
  • কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-এ বেশ কিছু বড় কর সংস্কার আনা হয়েছে, যা আবাসন ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
Advertisement