করোনার সময় বহুবিধ বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও দেশের বৃহত্তম জীবন বিমা সংস্থা এলআইসি-র (LIC) খতিয়ান বেশ ঈর্ষণীয়। সদ্য সমাপ্ত অর্থবর্ষ ২০২০-২১ এর জন্য প্রকাশিত হিসাব অনুযায়ী প্রথম বছরের প্রিমিয়াম সমস্ত পুরনো নজিরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। ‘ইনডিভিজুয়াল অ্যাসিউরেন্স বিজনেস’-এর খাতে সংস্থার মোট সংগ্রহ হয়েছে ৫৬,৪০৬ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় ১০.১১ শতাংশ বেশি। এছাড়াও ২.১০ কোটি পলিসি বিক্রি হয়েছে সারা বছর। এর মধ্যে কেবল মার্চ মাসেই বিক্রি হয়েছে ৪৬.৭২ লক্ষ পলিসি-গত বছরের মার্চের তুলনায় প্রায় ৩০০ শতাংশ বেশি।
এ বিষয়ে বিশদ জানতে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম LIC-র পূর্বাঞ্চলের জোনাল ম্যানেজার শ্রী এন পি সিনহার সঙ্গে। তিনি “সঞ্চয়” কে জানালেন সংস্থার নানাবিধ পরিকল্পনার কথা। নিচে রইল সেই সাক্ষাৎকারেরই নির্যাস।
অর্থবর্ষ ২০২০-২১-এ পূর্বাঞ্চলে কেমন ব্যবসা হয়েছে?
লকডাউন এবং আরও কিছু বিধিনিষেধের ফলে আমরা গত বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত অসুবিধায় ছিলাম। নতুন ব্যবসা অল্পই করতে পেরেছি। ঘূর্ণিঝড় আমফানের জন্য গ্রামীণ বাজারে নতুন ব্যবসা এবং রিনিউয়াল প্রিমিয়াম কালেকশন, দুই-ই কমে গিয়েছিল। অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ার পর, বছরের শেষ দুই কোর্য়াটারে পুর্বাঞ্চলের অগ্রগতি যথেষ্টই ভাল। ফার্স্ট ইয়ার প্রিমিয়াম ইনকাম বেড়েছে ৭.৭২ শতাংশ। সিঙ্গল প্রিমিয়াম এবং অ্যানুইটির ক্ষেত্রে আমাদের বৃদ্ধি প্রায় ২৩ শতাংশ। তবে এও বলে রাখি যে যদি পলিসির সংখ্যা দেখেন, তাহলে আমরা ১৩.২৫ শতাংশ পড়ে গিয়েছি।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে Mamata LIVE UPDATE: দিল্লিতে সোনিয়ার বাড়িতে মমতা, একটু পরই ‘চায়ে পে চর্চা’]
আগামী কয়েকটি বছরে এখানে বাজার কোন দিকে যেতে পারে?
প্রথমেই বলি, এখানে অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার ঊর্ধ্বমুখী। গ্রাহকরা ডিজিটাল ট্র্যানজ্যাকশনে খুবই উৎসাহী হয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে অামাদের বৃদ্ধির হার প্রায় ৩০ শতাংশ। এ ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। এটি কেবল একদিক হল। অন্যদিকে আমরা বুঝতে পারছি আমাদের গ্রাহকরা অ্যানুইটি এবং ইউলিপ- এই দুই প্রোডাক্ট বিলক্ষণ পছন্দ করছেন। আর যদি বিশেষ কোনও প্রোডাক্টের কথা আলাদাভাবে জানতে চান, আমি নির্দিষ্টভাবে সম্প্রতি বাজারে আসা ‘বিমা জ্যোতি’ এবং ‘বচত প্লাস’, এই দুটির কথা উল্লেখ করব।
গ্রাহকরা আর কি পছন্দ করছেন?
যদি নতুন প্রজন্মের কথা ধরেন তাহলে দেখবেন ইউলিপে আস্থা রাখছেন অনেকেই। অ্যানুইটির ক্ষেত্রেও তা-ই প্রযোজ্য। বিমা জ্যোতির কথা আগেই বলেছি। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই ক্ষেত্রে পূর্বাঞ্চলের ব্যবসা সর্বভারতীয় নজির গড়েছে। এটি নিঃসন্দেহে গ্রাহকদের চাহিদার প্রতিফলন। ইউলিপের কথায় আসি। অর্থবর্ষ ২০১৯-২০তে আমাদের অঞ্চলে মোট ইউলিপ প্রিমিয়াম ছিল কেবলমাত্র ২.৮১ কোটি টাকা। তুলনায় গত অর্থবর্ষে তা বহুগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২.৯৫ কোটি টাকায়। এটি অবশ্যই বিরাট প্রাপ্তি।