উন্নয়ন এক মুহূর্তে আসে না। ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হয়। সমবায়ের উন্নয়নের দ্বারা রাজ্য তথা দেশের ক্ষমতাবৃদ্ধি সম্ভব। কিন্তু কীভাবে? সঠিক পদ্ধতি কী? আজকের দিনে সমবায়ের গুরুত্বই বা কতটা প্রাসঙ্গিক? ‘সঞ্চয়’-এর জন্য বিশেষ এই লেখায় ব্যাখ্যা করলেন খড়দহ কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মুখ্য আধিকারিক সজল দে
সমবায়ের উন্নয়নের মাধ্যমে রাজ্যকে এবং দেশকে আর্থিক ও অন্যান্য বিষয়ে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব। রাজ্যকে ও দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত এবং দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে সমবায়ের সার্বিক উন্নতি সাধন এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি। সমবায় সম্পর্কে সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে কারণ কেবলমাত্র সমবায়ই বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মহাজনী প্রথাকে শক্তিহীন করতে পারে। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাহাদুরের সমবায় দপ্তরের গুরুত্ব দেওয়াটা খুবই প্রয়োজন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সকল সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো পরোক্ষভাবে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি দ্বারা পরিচালিত হওয়া এবং সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকার জন্য বেশ কিছু ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। রাজনীতির পাশাপাশি পরিচালক হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমবায় আইন ২০০৬-এর পরিবর্তন আনার প্রয়োজন। যাতে সমবায় সংস্থাগুলো তাদের সদস্যদের স্বার্থে পেশাগত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সমবায়ের মূল নীতি হল ‘‘By the member, of the member and for the member’’। এই বিষয়টি সর্বদা পরিচালকগণদের বিবেচনার মধ্যে থাকা উচিত।
বর্তমানে খড়দহ কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেড অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের মতো বিভিন্ন রকম পরিষেবা গ্রাহকদের দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ইউপিআই, মোবাইল ব্যাঙ্কিং, কিউআর ফেসিলিটি, সেলফ আপডেট পাসবুক প্রিন্টিং প্রভৃতি। বলা যেতে পারে, আগামী দু’মাসের মধ্যে গ্রাহকরা ক্যাশ জমা দেওয়াও মেশিনের মাধ্যমে করতে পারবেন। এই বিষয়ে আরবিআই-এর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উন্নত প্রযুক্তিই একমাত্র রাস্তা রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কোভিড-১৯ এর পরিস্থিতিতে সারা বিশ্ব ডিজিটাইজেশনের সুফল পেয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহক বৃদ্ধির পাশাপাশি কাস্টমার সার্ভিসের উন্নতিও করা সম্ভব। যদিও কিছু ঝুঁকি যেমন জালিয়াতি, ফিশিং, ম্যালওয়্যারের মতো যা কিছু সমস্যা রয়েছে–তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
ডিপোজিট সংক্রান্ত: বর্তমানে খড়দহ কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে যে সকল ডিপোজিট চালু আছে, তাতে অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের তুলনায় সুদের হার অল্প-বিস্তর হলেও বেশি আছে। ইক্যুইটির বাজারে অস্থিরতা এবং রিয়েল এস্টেট বাজারে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যের প্রেক্ষাপটে স্থায়ী আমানত বিনিয়োগকারীদের কাছে মূল্য প্রদান করবে বলে আশা রাখি। কারণ হিসাবে স্থায়ী বিনিয়োগে কম ঝুঁকিতে নির্দিষ্ট আয় সুনিশ্চিত হয় এবং রিয়েল এস্টেট বাজারে বিনিয়োগের তুলনায় লিকুইড ও ফিক্সড ডিপোজিট ইনভেস্টমেন্টের ক্যাপিটাল ইরোসান হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। যা ইক্যুইটি মার্কেটে ডাউন ট্রেন্ড আছে। এই বিষয়গুলোতে সম্যক ধারণা থাকাটা অত্যন্ত আবশ্যিক আজকের দিনে।