স্টাফ রিপোর্টার: সামনে ২১ জুলাই। উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারে কাতারে মানুষ আসবে ধর্মতলায়। এই বিপুল জনস্রোতকে সামাল দিতে হবে রেলকেই। সোমবার নবান্নে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রেলের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যসচিবকে আলোচনা করার নির্দেশও দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "একুশে জুলাই আমাদের বড় অনুষ্ঠান হয়। আমরা ভাড়া চাইলেই রেল আমাদের থেকে টাকা নেয়। সেদিন রাশ ক্লিয়ার করা কিন্তু রেলের দায়িত্ব।" মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, তিনি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন কুম্ভমেলা থেকে অনেক জায়গায় রাশ ক্লিয়ার করার কাজ করেছেন। তাঁর মতে, এটা রেলের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যদি কোথাও বাড়তি রাশ হয়, সেটা ক্লিয়ার করতে হবে। সে বার বার রেল চালিয়ে হোক বা বগি বারিয়ে।
রেলকে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, "তুমি যখন আমাকে ভাড়া দিচ্ছ না। তখন মানুষের হেনস্তার বিষয়টিও তোমাকেই দেখতে হবে। উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক মানুষ আসবেন। আমায় যদি ভাড়া দাও কোন অসুবিধা নেই আমি পেমেন্ট করে দেব। আর যদি না দাও মানুষকে নিয়ে আসার দায়িত্ব তোমায় নিতে হবে। অতদূর থেকে তো আমি তাদের বাসে আনতে পারব না। তাছাড়া বাসে কটা লোক ধরবে?" মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, রেল স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারে। বগিও বাড়িয়ে দিতে পারে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে রাখেন, "১৮ তারিখ থেকে লোকজন আসতে শুরু করবে। উত্তরবঙ্গ থেকে। রেলকেই রাস্তা ক্লিয়ার করতে হবে।"
[আরও পড়ুন: শিক্ষাঙ্গনই এইচআইভির আঁতুড়ঘর! মারণ রোগে ত্রিপুরায় মৃত ৪৭ পড়ুয়া, আক্রান্ত ৮২৮]
এদিন পুলিশকেও সতর্ক করা হয়। কেউ জোরে গাড়ি চালালে সতর্ক করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "কোনও দুর্ঘটনা যাতে না হয়। পুলিশ যেন দেখে। কেউ জোরে চালালে সতর্ক করতে হবে। একটা ঘটনা ঘটলে অনেক প্রাণহানি হয়।" সামনে মহরম। সেদিন যাতে কোনও পথ দুর্ঘটনা না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, "মহরমে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না হয় নজর রাখবেন। আমি পুলিশকে অনেকবার বলেছেন বাঁশের ব্যারিকেড করে দিতে বলেছি। ওর মধ্যে দিয়ে ওরা যাবেন এটা খুব সেনসিটিভ ব্যাপার। জেলাগুলোতেও এই নির্দেশ মানতে হবে। উলটোরথ আছে।"
হাতে আর ১৩ দিন বাকি। তারপরই গোটা কলকাতা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে একুশে জুলাই কর্মসূচির জন্য। আর তাই মুখ্যমন্ত্রী আগাম সতর্ক করে দিলেন। তাঁর কথায়, "২১ জুলাই একটাই বড় প্রোগ্রাম। অনেক লোকজন আসবে। গাড়ি আসবে। যেন কোনও দুর্ঘটনা না হয় পুলিশ দেখবে। আমি মুখ্যসচিবকে বলব রেলের সঙ্গে মিটিং করতে। আমরা ভাড়া চাইলে রেল টাকা নেয়। সেদিন রাশ ক্লিয়ার করা রেলের দায়িত্ব। পুর দপ্তরকে বলব দ্রুত জল সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। হাওড়ায় টাকা আগেই দেওয়া হয়েছে। রেলকে বলতে হবে। রেল কেন নিকাশির ব্যবস্থা করবে না। মেট্রোর ময়লায় ড্রেন বন্ধ হচ্ছে। এটা ওরা করে না। জল জমলে আবার ডেঙ্গি হবে।"
মুখ্যমন্ত্রী এদিন মনে করিয়ে দেন, "আজ সেফ লাইফ সেফ ড্রাইভ। অ্যাক্সিডেন্ট সবচেয়ে বেশি হয় বর্ষা কালে। রাতের অন্ধকারে গাড়ি চালাতে গিয়ে। কুয়াশার কারণে। আলিপুর থেকে হাজরা পর্যন্ত ট্রাম লাইন থাকায় অ্যাক্সিডেন্ট হচ্ছে। ওখানে তো এখন ট্রাম চলে না। পরিবহন দপ্তরকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার চোখের সামনে হয়েছে। এমন অনেক জায়গায় আছে।"