সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবন একেবারে বদলে গিয়েছে। মহাকাশ স্টেশনে 'বন্দি' হয়ে নিত্যদিনের কাজকর্ম ভুলে গিয়েছেন সুনীতা উইলিয়ামস! হাঁটাচলা, বসা, ঘুমনো - এসবের অনুভূতি কেমন, তা যেন মনেই করতে পারছেন না ভারতীয় বংশোদ্ভুত নভোচর। এও কি সম্ভব? হ্যাঁ, শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই খাঁটি সত্যি। মহাকাশে দিনযাপনের জন্য যে নিয়ম, কৌশল শিখেছেন সেটাই এখন যেন আত্তীকৃত হয়ে গিয়েছে। নিজেই সেকথা জানালেন সুনীতা উইলিয়ামস। বললেন, ''হাঁটার অনুভূতি কেমন, তা ভুলেই গিয়েছি।''
গত বছরের মে মাসে স্পেস এক্সের রকেটে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর। তাঁদের ফেরার কথা ছিল জুনে। কিন্তু যান্ত্রিক রকেটে ত্রুটির কারণে তাঁদের ফেরা বিলম্বিত হয়েছে। চলতি মাসে দুই নভোচর পৃথিবীর মাটিতে পা রাখতে পারবেন বলে জানিয়েছে নাসা। আর ফেরার প্রাক্কালেই আশঙ্কার কথা শোনালেন সুনীতা উইলিয়ামস। তাঁর কথায়, ''আমি এখানে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছি। আমি অনেকদিন হাঁটিনি, বসিনি। এখন মনে করার চেষ্টা করছি যে হাঁটার অনুভূতিটা কেমন। চোখ বন্ধ করলে হয়ত মনে হতে পারে, খুব বেশিদিন আমি এখানে আসিনি। কিন্তু এখানে সময়ের হিসেব অন্যরকম। সামান্য ব্যবধান দীর্ঘ বলে মনে হয়।''
প্রায় ২৩৪ দিন ধরে সুনীতা, বুচ মহাশূন্যে দিন কাটাচ্ছেন। পৃথিবীর সাধারণ অভিকর্ষ বল নয়, সেখানে 'মাইক্রোগ্র্যাভিটি'তে কাজ করতে হয়। অর্থাৎ সবই প্রায় ভাসমান অবস্থায়। আকর্ষণ বল না থাকায় মাটি ছোঁয় না পা। বসা যায় না, লম্বা টানটান হয়ে শোয়াও যায় না। মহাশূন্যে দীর্ঘ সময় থাকলে হাড় ক্ষয়ে যায়। খাওয়াদাওয়াও পৃথিবীর মতো নয়। অসুবিধা ঢের। সুস্থ থাকাও সহজ নয়। সবমিলিয়ে এতদিন ধরে সুনীতা, বুচের এই জীবন যথেষ্ট কঠিন। এবার তাঁদের ফেরার সময় এসেছে। রকেট তাঁদের নিয়ে ধরাধামে ফেরার পর আর ভেসে থাকা নয়, ভূপৃষ্ঠে পা রেখে চলতে-ফিরতে হবে। আর সেটাই এখন চিন্তার সুনীতার কাছে। তিনি যে হাঁটতে ভুলেই গিয়েছেন!
