সুমিত বিশ্বাস: হাতি–হরিণ–হায়নাই শুধু নয়, ভল্লুকেরও (Bear) স্থায়ী ‘ডেরা’ রয়েছে পুরুলিয়ার (Purulia) একাধিক বনাঞ্চলে। ট্র্যাপ ক্যামেরায় তা ধরা না পড়লেও বিষ্ঠা সংগ্রহে এমনই প্রমাণ সামনে এল। কোটশিলা বনাঞ্চল ছাড়াও ভল্লুক রয়েছে বলরামপুর বনাঞ্চলেও। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ শ্রেণিতে এক নম্বরে রয়েছে ভল্লুক।
জঙ্গলমহলের এই জেলায় বনভূমি ক্রমশ কমতে থাকায় বন্যপ্রাণদের আর আগের মতো দেখা মিলছিল না কয়েক বছর ধরে। শুধু ঝাড়খন্ডের দলমা বা হাজিরাবাগ থেকে আসা বুনো হাতি আর স্থানীয় জঙ্গলের হায়না-সহ কিছু প্রাণীর বিচরণই দেখছিল বনদপ্তর। আর মাঝে মধ্যে লোকালয়ে চলে আসা চিতল হরিণ বা বার্কিং ডিয়ার।
জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (Zoological Survey of India ) এই জেলার তিন বনবিভাগেই কয়েক মাস আগে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসায়। বার্কিং ডিয়ার, গোল্ডেন জ্যাকেল, লেপার্ড ক্যাট, নেকড়ে, সজারু, নেউল, প্যাঙ্গোলিনের মতো পশুদের ছবি ধরা পড়ে। আর তাতে আরও উৎসাহ বাড়ে জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ারও। এর পর প্রাণীদের বিষ্ঠা সংগ্রহ শুরু হয়। আর তা দেখে বোঝা যায় কোটশিলা ও বলরামপুর বনাঞ্চলে ভল্লুক রয়েছে। পুরুলিয়া ও কংসবাতী উত্তর বিভাগের ডিএফও দেবাশিস শর্মা এবং কংসবাতী দক্ষিণ বিভাগের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, বিষ্ঠা সংগ্রহ করে তার নমুনা জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কলকাতা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনও তার রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি।
বলরামপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক সুবিনয় পান্ডা বলেন, “ঘাটবেড়া বিটের গজাবুরু পাহাড় এলাকায় ডুমুরবেড়াতে আমরা ভল্লুকের বিষ্ঠা পেয়েছি। এই এলাকায় ভল্লুক রয়েছে এটা আমাদের জানা ছিল না। এটা আমাদের কাছে বড় প্রাপ্তি।” কোটশিলা বনাঞ্চলেও ভল্লুকের বিষ্ঠা পাওয়ার পর সেখানকার আধিকারিক সোমা দাস সরকার বলেন, “আমাদের বনাঞ্চলে ভল্লুক আছে। তবে তার প্রমাণ আবার হাতেনাতে পাওয়া গেল।” এছাড়া কোটশিলা বনাঞ্চলের গজরাইডিতে সজারু, প্যাঙ্গোলিনের বিষ্ঠাও মিলেছে।
[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য আধিকারিক পরিচয়ে করোনা রোগীকে হাসপাতালে ভরতির নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার যুবক]
বনাঞ্চল বাড়ায় ২০১৭ সালের জুলাই-এ গড়পঞ্চকোটকে ‘কনজারভেশন রিজার্ভ’ করা হয়। কিন্তু অযোধ্যা, বাঘমুন্ডি, মাঠা, ঝালদায় অবাধে গাছ কাটা চলছে। আবার বলরামপুর, কোটশিলা বনাঞ্চলের কয়েকটি অংশে জঙ্গল বেড়েছে। পুরুলিয়া বনবিভাগের ঝালদা ও কংসাবতী উত্তর বিভাগের বান্দোয়ান এক, বান্দোয়ান দুই, যমুনা বনাঞ্চলে ভল্লুক রয়েছে বলে বনদফতরের দাবি। যদিও গত কয়েক বছরে তার প্রমাণ হাতেনাতে মেলেনি।