shono
Advertisement

অশক্ত শরীরে উত্তরসূরিদের পুজোর মন্ত্র শেখাচ্ছেন সেবাইত-বাবা

২০০ বছরের প্রাচীন পুজোয় চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে চলে অন্নভোগ। The post অশক্ত শরীরে উত্তরসূরিদের পুজোর মন্ত্র শেখাচ্ছেন সেবাইত-বাবা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:42 PM Sep 18, 2018Updated: 07:42 PM Sep 26, 2018

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল ঝালদার চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।

Advertisement

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বয়সের ভারে ন্যুব্জ সেবাইত। কিন্তু সেবাইতই যে পুরোহিত। তাই বাড়ির পুজো  চালিয়ে নিয়ে যেতে ছেলেদের মন্ত্র শেখাচ্ছেন সেবাইত-পুরোহিত বাবা। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঠাকুর দালানে মায়ের কাঠামোতে মাটি দিয়ে সেখানেই শুরু হয়েছে দুর্গাপুজোর মন্ত্র শেখানোর পাঠ। একেবারে ভক্তি ভরে পুজো শিখছেন দুই ছেলে। সেবাইত বাবা যে তাদের হাতে পুজোর দায়িত্ব তুলে দিতে চান। যাতে এবারের পুজো থেকেই দুই ছেলে মা উমাকে দেখে রাখে। সেই আপ্রাণ চেষ্টাই করে যাচ্ছেন বৃদ্ধ বাবা।

পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের ন’ নম্বর ওয়ার্ডের পোদ্দার পাড়ার বাসিন্দা উৎপলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের বাড়ির দু’শো বছরেরে প্রাচীন পুজোর তিনিই পুরোহিত। ১৯৭২ সালে সেবাইতের দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় আঠারো বছর পর এই পুজো নিজ হাতে করে আসছেন। তার আগে অবশ্য অন্য পুরোহিতই পুজো করতেন। এখানে একচালার মূর্তি চোখ টানে সকলের। এদিন ঠাকুরদালানে মা উমার কাঠামোতে মাটি পড়তেই কেমন যেন পুজো-পুজো গন্ধ গ্রাস করে গোটা চট্টোপাধ্যায় বাড়িকে। এই পুজোরও একটা ইতিহাস রয়েছে। ১৮০৭ সালে মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। প্রথমে এই পুজো ছিল ঝালদার রাজা নটবর সিংয়ের। তারপর এই পুজোর প্রথম সেবাইত বংশী কাঞ্জী। ওই কাঞ্জী পরিবারের পরবর্তী সেবাইত ছিলেন এক মহিলা। নাম হরিমতি কাঞ্জী, তাঁর সময় থেকেই এই পুজোয় বলি বন্ধ হয়ে যায়। রাজার তরফে আর পাঁঠা না দেওয়ায় ওই মহিলা সেবাইতই নিজে দু’বার পাঁঠা কিনে বলি দেন। তখন রাজা ছিলেন অমরনাথ সিং। তারপর থেকে প্রায় ৭০-৭৫ বছর ধরে বলি বন্ধ আছে। তবে পুজোর চার দিনই অন্নভোগ হয়ে থাকে। ন’রকম তরকারি,  ন’রকম ভাজার ভোগ খেতে চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।

[পঞ্চায়েতে জয়, রাতারাতি নীল-সাদা অফিস গেরুয়া-সবুজ!]

এলাকার বাসিন্দা চিরঞ্জীব চন্দ্র বলেন,  ‘এই পারিবারিক পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য অন্নভোগ। এখানকার মানুষ ভক্তি ভরে এই পুজোয় শামিল হন। তাছাড়া সেবাইতই যে পুরোহিত। এটাও একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য।’ এদিন সেবাইত উৎপলেন্দুবাবু বড় ও মেজো ছেলেকে পুজোর মন্ত্র শেখাতে শুরু করেন। সেবাইত বাবার কথায়, ‘আর দু’ বছর হলে আশির ঘরে পা দেব। তাই ছেলেদেরকে দুর্গাপুজোর মন্ত্র শিখিয়ে দিতে চাই। আমার খুব ইচ্ছে এবার থেকে তারাই পুজো শুরু করুক।’ ফি বছরই তাঁদের এই পারিবারিক পুজোয় দুই ছেলে বিশ্বজিৎ ও সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায় বাবাকে সহযোগিতা করেন। এমনকী, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোগিতা করেন খুড়তুতো ভাই অমিত ও সুমিত চট্টোপাধ্যায়। এদিন পুজোর মন্ত্র শিখতে বসে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পুজোর প্রায় সব কিছুই জানি। কারণ ব্রত করি। তবে মন্ত্র বলে এবার থেকেই পুজো করতে পারব কিনা বুঝতে পারছি না।’ সেবাইতের মন্ত্র পাঠ দানে গমগম করছে ঝালদার পোদ্দারপাড়ার ঠাকুর দালান।

[ভিন ধর্মে বিয়ে, বর ও তাঁর পরিবারকে খুনের হুমকি কনের পরিবারের]

The post অশক্ত শরীরে উত্তরসূরিদের পুজোর মন্ত্র শেখাচ্ছেন সেবাইত-বাবা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement