সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজায় বইছে রক্তগঙ্গা। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪৫ জনের। আহতের সংখ্যা ৪৫০-রও বেশি। শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে। ইজরায়েলি সেনা অবশ্য এখনও এই হামলার বিষয়ে কোনও দাবি করেনি।
উত্তর গাজার এক বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান-আল-সুলতান বলেন, “মধ্যরাত থেকে লাগাতার আক্রমণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিমান হামলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে বহু বাড়িঘর। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে প্রচুর মানুষ। হাসপাতালগুলির ভিতরের অবস্থা ভয়াবহ।”
দু’মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হতেই গাজায় পুরোদমে আক্রমণ শুরু করেছে ইজরায়েল। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ইতিমধ্যেই দখল করে নিয়েছে তারা। সঙ্গে চলছে মানব নিধন। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে বৃহস্পতিবার রাতের গোলাবর্ষণে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। তার আগে বুধবার উত্তর ও দক্ষিণ গাজা মিলিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭০ জন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। যার বদলা নিতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইহুদি দেশটি। তারপর থেকেই জারি লড়াই, মৃত্যুমিছিল। গাজাজুড়ে তীব্র হয়েছে খাদ্যের হাহাকার। বাইরে থেকে সাহায্য আসার পথও বন্ধ। গত ২ মার্চ থেকে ইজরায়েল গাজায় ঢোকার পথ রুদ্ধ করে রেখেছে।
এদিকে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে এলেও তিনি ইজরায়েলে আসেননি। তাঁর সফর ঘিরে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তিনি এলে যুদ্ধবিরতি কিংবা গাজায় ত্রাণ পাঠানোর পথ ফের খোলার মতো আশাব্যাঞ্জক কিছু ঘটতে পারে। কিন্তু তা না হওয়ায় গাজায় ত্রাণ পৌঁছনোর পথ লাগাতার তৃতীয় মাস ধরে বন্ধ। ফলে ওই ভূখণ্ডে মানুষের হাহাকার কার্যতই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সেখানকার একমাত্র ক্যানসার হাসপাতালও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ইজরায়েলি গোলায় বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি আশপাশের রাস্তাও ধসে যাওয়ায় সেখানে পরিষেবা অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ প্যালেস্তিনীয় রয়েছেন অনাহারে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম খাদ্যও পাচ্ছেন না। যদিও ইজরায়েল প্রশাসন এই দাবি মানতে নারাজ। প্রশাসনের মুখপাত্র ডেভিড মেনসারের দাবি, খাবার অন্যায়ভাবে মজুত করে রেখেছে হামাস। তাদের উচিত সাধারণ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়া।
