সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামাসের পাশাপাশি এখন ইজরায়েলের বন্দুকের নিশানায় ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লা। যাদের খতম করতে লেবাননে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। ইহুদি দেশটির হামলায় নিকেশ হন হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লা। তার পর থেকে জল্পনা চলছিল নতুন প্রধান কে হবে? অবশেষে আজ মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়ে নতুন নেতা হিসাবে নাইম কাসেমের নাম ঘোষণা করল হেজবোল্লা।
গাজা যুদ্ধের মাঝেই গত জুলাই মাস থেকে সংঘাত তীব্র হয়েছে ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে। ইজরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির এক ফুটবল স্টেডিয়ামে আছড়ে পড়েছিল শিয়া জঙ্গি সংগঠনটির রকেট। হামলায় মৃত্যু হয় ১২ জনের। এই ঘটনাতেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে লেবাননে আক্রমণের ধার বাড়ায় ইজরায়েল। ২৭ সেপ্টেম্বর ইজরায়েলি সেনার অভিযানে নিহত হন নাসরাল্লা। কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর উত্তরসূরি হাশেম সাফেদ্দিনকেও খতম করে আইডিএফ। এবার হেজবোল্লার প্রধান হিসাবে উঠে এল নতুন নাম। কে এই নাইম কাসেম?
রয়টার্স সূত্রে খবর, হেজবোল্লার শুরা কাউন্সিলের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ৭১ বছরের কাসেম। ১৯৯১ সালে সংগঠনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল পদে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। সেই থেকে প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই পদে ছিলেন কাসেম। নাসরাল্লার মৃত্যুর পর দীর্ঘ অভিজ্ঞতার জন্য নতুন প্রধান হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে তাঁকে। এবার দেখার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কোন পন্থা অবলম্বন করেন কাসেম। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, যেভাবে নাসরাল্লা ও সাফেদ্দিন খতম হয়েছে এবার কী কাসেমের পালা?
কয়েকদিন আগে শোনা গিয়েছিল, যুদ্ধ থামানোর পথেই নাকি হাঁটতে চেয়েছিলেন নাসরাল্লা! কিন্তু সেই প্রস্তাব দেওয়ার আগেই তাঁকে নিকেশ করে দেয় ইজরায়েলি সেনা। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেন লেবাননের বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লাহ রশিদ বাউ হাবিব। হামলার সময় লেবাননের রাজধানী বেইরুটের দক্ষিণে দহিয়ার একটি বহুতলের নিচে বানানো বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। হেজবোল্লার কয়েকজন শীর্ষনেতার সঙ্গে আলোচনা চলছিল তাঁর। মাটির কয়েক ফুট নিচে থাকা সেই বাঙ্কারকে চিহ্নিত করে ইজরায়েলি সেনা। তার পর সেই বহুতলের উপর একের পর এক বোমাবর্ষণ করে তারা। সেসময় ২১ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়েই নাকি আলোচনা চলছিল। হাবিবের দাবি, নিজের অজান্তেই নাকি শান্তির পথ বন্ধ করেছে ইজরায়েল।
তবে যতদিন যাচ্ছে সংঘাত তীব্র হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে। ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ছে আঞ্চলিক স্তরে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামেনি গাজায়। একে একে নিকেশ হয়েছে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ ও নয়া প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার। যদিও এখনও নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা করেনি হামাস। এর মাঝেই ইরানের সঙ্গে লড়াই শুরু হয়েছে তেল আভিভের। তেহরানের মিসাইল হামলার বদলা নিয়ে পালটা আক্রমণ শানিয়েছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে ইরান। ফলে পশ্চিম এশিয়ার এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকেই নজর ওয়াকিবহাল মহলের।