shono
Advertisement
Cooch Behar

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ব্রাউন সুগার তৈরির কারখানা! ধৃত ছয়

এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
Published By: Paramita PaulPosted: 12:02 PM Apr 10, 2025Updated: 12:02 PM Apr 10, 2025

বিক্রম রায়, কোচবিহার: ওপারে বাংলাদেশ সীমান্ত। আর সেই সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া লাগোয়া ছোট্ট ঘর। দূর থেকে দেখলে কারও সন্দেহ হওয়ার কথা নয়। তবে সেখানেই গজিয়ে উঠেছিল মাদক তৈরির কারখানা। রীতিমতো প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছিল ব্রাউন সুগার। তৈরির জন্য মালদহের কালিয়াচক থেকে শুরু করে ভুটান সীমান্তের জয়গাঁ থেকে আনা হয়েছিল 'দক্ষ কারিগর'। শীতলকুচির পাঠানটুলি এলাকায় পুলিশি অভিযানের পর এই ধরনেরই কারখানার হদিশ মিলেছে। সেখানে ব্রাউন সুগার তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। মোট ছ'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই কারবার যার বাড়িতে চলছিল সেই তাহেজুল ইসলাম অবশ্য পলাতক। তাঁর স্ত্রী জেসমিন বিবি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

Advertisement

কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় একটি কারখানা তৈরি করে সেখানে মাদক তৈরি করা হচ্ছে বলে খবর পেয়েই শীতলকুচি থানার পুলিশ অভিযান চালায়। মালদহের বাসিন্দা-সহ মোট ৬ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার হয়েছে বিভিন্ন সরঞ্জাম। শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন বলেন, "শীতলকুচি ব্লকের গোলেনাওহাটি অঞ্চলের পাঠানটুলি এলাকায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য জেসমিন বিবির বাড়িতে কৃত্রিম ল্যাব বানিয়ে ব্রাউন সুগার তৈরির কাজ চলছিল। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি থেকে ব্রাউন সুগার তৈরির বিভিন্ন জিনিসপত্র-সহ গ্যাস সিলিন্ডার, ওভেন, সিলভারের একটি গামলা এবং প্লাস্টিকের কয়েকটি বড় পাত্র-সহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করেছে। এই ঘটনা স্পষ্ট তৃণমূলের মধ্যে বেআইনি কারবার সীমান্ত এলাকায় দেদার ভাবে চলছে।” তিনি আরও বলেন, "এই ধরনের কারবার শুধুমাত্র একজন পঞ্চায়েত সদস্য চালাতে পারে না। তাঁর সঙ্গে দলের নেতারাও জড়িত রয়েছে। এই কারবারের অর্থ দিয়ে সীমান্তে বোমা বন্দুকের রাজনীতি করছে তৃণমূল।" যদিও তৃণমূলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন জানিয়েছেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে সঠিক কাজ করেছে। তৃণমূল কোনও ধরনের বেআইনি কারবারকে মদত দেয় না। সে যেই থাক না কেন, পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে এটাই তার প্রমাণ। তবে অভিযোগ যদি সত্য থাকে দলীয়ভাবেও খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের ধৃতদের মধ্যে মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান (২৬), মালদহের ভকজান গোপালপুর এলাকার দুজন বাসিন্দা করিম শেখ (১৮) এবং শাহীন রেজা (২১), আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁর মফিজুল আলম (৪২), আবিদুল গনি (৪৩) ছাড়াও শিলিগুড়ির ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দা বাপুন পাল (৩৮) রয়েছে। এই ৬ জনের ব্রাউন সুগার তৈরিতে দক্ষতা রয়েছে। পোস্ত গাছের ফল থেকে সংগ্রহ করা আঠা বিভিন্ন কেমিক্যাল প্রক্রিয়াকরণ করে তারা ব্রাউন সুগার সেখানে তৈরি করছিল। পরবর্তীতে সেটা জেলার বিভিন্ন এলাকা তো বটেই অন্যান্য জেলাতেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলেই অভিযোগ রয়েছে। কেউ যাতে জানতে না পারে, তাই গভীর রাতে এই কাজ করা হতো বলেই প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ওপারে বাংলাদেশ সীমান্ত।
  • আর সেই সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া লাগোয়া ছোট্ট ঘর।
  • দূর থেকে দেখলে কারও সন্দেহ হওয়ার কথা নয়।
Advertisement