shono
Advertisement
Madhyamgram

দাম্পত্য মিলনের স্বপ্ন দেখিয়ে 'খুন'! পিসিশাশুড়ির গয়না বিক্রি করে নতুন অলংকারও কিনেছিল ফাল্গুনীরা

খুনের আগে পরিকল্পিতভাবেই সুমিতাকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিল ফাল্গুনী ও আরতি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 08:34 PM Mar 08, 2025Updated: 08:36 PM Mar 08, 2025

অর্ণব দাস, বারাসত: যত সময় এগোচ্ছে, মধ্যমগ্রামে পিসিশাশুড়িকে হত্যারহস্য যেন খুলছে পরতে পরতে। এবার উঠে এল বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষকে খুনের পর মৃতের শরীর থেকে সোনার গয়না খুলে মধ্যমগ্রামেরই একটি সোনার দোকানে বিক্রি করেছিল ধৃত ফাল্গুনী ঘোষ ও আরতি ঘোষ। সেই গয়না বিক্রির সামান্য টাকা নিজেদের হাতে রেখে বাকি টাকায় নতুন গয়না কিনেছিল তারা! সোনা বিক্রি এবং কেনার কাগজপত্র নিয়ে ইতিমধ্যেই মধ্যমগ্রামের ওই সোনার দোকানদারকে জেরা করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন পুলিশ কর্তারা। পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ না হতেই শনিবার আরতি ঘোষকে বারাসত আদালতে পেশ করা হয়। চারদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় আপাতত আরতি ঘোষের কাছ থেকে নতুন কিছু তথ্য পাওয়ার নেই। তবে, ফাল্গুনী ঘোষ এখনও পুলিশ হেফাজতেই আছে।

Advertisement

রোমহর্ষক খুনের ঘটনায় ধৃত ফাল্গুনী ঘোষকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেদিন মৃতের গয়না বিক্রি করে তাদের হাতে এসেছিল ২ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে নগদ ৩২ হাজার টাকা হাতে রেখেছিল মা-মেয়ে। বাকি টাকায় নিজের পছন্দমত সোনার গয়না কিনেছিল ফাল্গুনী। খুনের পর বড়বাজার থেকে ট্রলি কিনে বৌবাজারের একটি সোনার দোকানে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকার সোনার গয়না অর্ডারের ঘটনা আগেই জানাজানি হয়েছিল। এরপর মধ্যমগ্রামের সোনার দোকান থেকে কেনা ও বৌবাজারে অর্ডার দেওয়া মিলিয়ে প্রায় চার লক্ষ টাকার সোনার গয়না কেনা হয়। আর সেসবের লোভেই পিসিশাশুড়িকে মা-মেয়ে মিলে খুন করেছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অসমের জোড়হাটে ফেরার টিকিট কেটেছিলেন নিহত সুমিতা ঘোষ। তার আগে মা-মেয়ে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে নিয়ে গিয়েছিল সুমিতাকে। তারপর ২৩ তারিখ খুনের ঘটনার দু'দিন আগে পিসিশাশুড়ির ভাঙা সংসার জোড়া লাগিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে সুমিতার প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষের সঙ্গে দেখা করতে পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটে গিয়েছিল তিনজন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবীও। সেখানে একটি পেট্রোল পাম্পে সুদীপ্তর সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাদের। সুমিতা তাঁর প্রাক্তন স্বামীকে আবার সংসার করতে চাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যদিও সুদীপ্ত জানান, তিনি চিন্তাভাবনা করে দেখবেন। জেরায় পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, আইনজীবীর থেকে দুটি অভিযোপত্র বানিয়েছিল ফাল্গুনী। সেই অভিযোগপত্র দুটি ভাড়া বাড়িতেই রয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ওই ভাড়া বাড়িতে গিয়ে পুনর্নির্মাণের সময় ওই দুটি অভিযোগপত্রে কি বিষয় নিয়ে লেখা হয়েছিল, সেটাও জানতে পারবেন তদন্তকারীরা।

এভাবে ফের সংসার করার স্বপ্ন দেখিয়ে পাশে থাকার নাটক করেই অসমে ফেরার আগেরদিন পিসি শাশুড়িকে পরিকল্পনামাফিক মধ্যমগ্রামে দক্ষিণ বীরেশ পল্লির ভাড়া বাড়িতে বিকেলে খুন করেছিল তারা। যদি ২৫ তারিখ কুমোরটুলিতে লাশ ভরা ট্রলি মা-মেয়ে লোপাট করতে পারত, তাহলে না ফেরার কারণ হিসেবে প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিখোজের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মধ্যমগ্রাম হত্যাকাণ্ডের পরতে পরতে রহস্য উন্মোচন!
  • মৃত পিসিশাশুড়ির শরীর থেকে গয়না খুলে বিক্রি করে নতুন অলংকার কিনেছিল ফাল্গুনী।
  • জেরায় জানিয়েছে সে।এছাড়া খুনের আগে পরিকল্পিতভাবেই সুমিতাকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিল তারা।
Advertisement