দেব গোস্বামী, বোলপুর: রবিবার মধ্যরাতের পর পূর্বপল্লী মাঠে পৌষমেলার (Poush Mela) আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনেই এবছরের পৌষমেলা সম্পন্ন হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার ভাঙা মেলার কোনও অংশই রাখা হয়নি। সোমবার সকাল থেকেই পূর্বপল্লী মেলার মাঠ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে নেমে পড়ে পুলিশ প্রশাসন, বোলপুর পুরসভা, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। এদিন মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হচ্ছে কিনা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ ও বিশ্বভারতীর কর্মী ও আধিকারিকেরা। ১ জানুয়ারির মধ্যেই পুরো মাঠ পরিষ্কার করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলেই জানা যায়।
অন্যদিকে টানা ছয় দিন ধরে পৌষমেলার (Poush Mela) টানে দেশ-বিদেশের বহু দর্শনার্থী ও মেলাপ্রেমী শান্তিনিকেতনে ভিড় জমান। মেলায় স্টলগুলিতে বিক্রি হয়েছে ভালোই। ফলে স্বভাবতই খুশি হস্তশিল্পী ও স্টল ব্যবসায়ীরা। যদিও মেলায় মোট কত কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে বা স্টল ভাড়া বাবদ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কত আয় হয়েছে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের দাবি, গত বছরের তুলনায় এবছর স্টল ভাড়া থেকে সংগৃহীত অর্থ এবং সামগ্রিক বিক্রি দুটোই বেশি হয়েছে। অন্যদিকে আবগারি দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, পৌষমেলার ছয় দিনে বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকায় প্রায় ৪৪টি দোকান থেকে মোট ২ কোটি ৪৯ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪১১ টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে দেশি মদের বিক্রি হয়েছে ৯৮ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৪০ টাকা। বিদেশি মদের বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ২৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৭৪০ টাকা।
শান্তিনিকেতনে ভিড় পর্যটকদের।
চলতি বছরে শান্তিনিকেতন মেলা ছিল জমজমাট। শুধু রাজ্য নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের উপস্থিতিতে বিকিকিনি চলে দেদার। এই সময়ে শান্তিনিকেতনের সামগ্রিক ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। হোটেল, রিসোর্ট ও হোমস্টের ভাড়া বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি থাকলেও কোথাও প্রায় খালি ঘর চোখে পড়েনি। হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, শুধু পৌষমেলা নয়, শীতের আমেজে গোটা জানুয়ারি মাস জুড়েই শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের ভিড় থাকবে। সব মিলিয়ে এবছরের পৌষমেলায় লাভের মুখ দেখায় খুশি ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক ও হস্তশিল্পীরা। বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, "২ জানুয়ারি থেকেই বিভিন্ন ভবনে পঠন-পাঠন শুরু হচ্ছে তাই পড়ুয়াদের স্বার্থেই ১ জানুয়ারির মধ্যে পূর্বপল্লীর মাঠ পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে।"
