সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কাঁকসায় টোল প্লাজার কর্মীদের বিরুদ্ধে গুন্ডাগিরির অভিযোগ। দূরপাল্লার বাসকর্মী ও যাত্রীদের উপরে চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল টোল কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই হামলার জেরে গুরুতর আহত হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন বাসচালক, কন্ডাক্টর ও যাত্রীরা। গোটা ঘটনায় ক্ষোভে ফুটছেন স্থানীয় বাস মালিক সংগঠনের কর্তারা। এই হামলার সুবিচার না মিললে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন তাঁরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের কাঁকসার বাঁশকোপা টোল প্লাজায়।
[ফেসবুকে ফেক প্রোফাইল তৈরি করে যৌনকর্মী পরিচয়, পুলিশের দ্বারস্থ কলেজ ছাত্রী]
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার ঘটনার সূত্রপাত। ওইদিন সন্ধ্যা ৫.৩০ মিনিটে বাঁশকোপার টোল প্লাজায় গাড়ির লম্বা লাইন ছিল। টোল ট্যাক্সের দীর্ঘ লাইন দেখে পাশের ভিআইপি লেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কৃষ্ণনগর থেকে বেনাচিতি গামী যাত্রীবাহী বাসটি। যেতে গিয়েই বিষয়টি টোল প্লাজার কর্মীদের নজরে পড়ে। অভিযোগ, টোলকর্মীরা সঙ্গেসঙ্গেই বাসকর্মীদের উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। এই ঘটনায় বাসকর্মীদের সঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ জানান যাত্রীরাও। রাগের বশে এক টোলকর্মীকে চড়ও মারেন বাসের খালাসি মনোজিৎ সিং। এনিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বচসাও চলে। বাকি যাত্রীদের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলে বেনাচিতির উদ্দেশ্যে বাসটি রওনা হয়ে যায়। শনিবার সকাল ৭.৩০ মিনিটে ফের বাসটি বাঁশকোপা টোল প্লাজায় এলেই ক্ষুব্ধ টোলকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। আগের দিনের ঘটনার কথা মাথায় রেখে তৈরিই ছিল জনা তিরিশেক টোলকর্মী। অভিযোগ, বাসটি থামতে না থামতেই দলবেঁধে চড়াও হয় তারা। বাঁশ, রড নিয়ে বাসে ঢুকে খালাসি-সহ চালক সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও কন্ডাক্টর রাহুল খানকে বেধড়ক মারধর উন্মত্ত টোলকর্মীরা৷ বাধা দিতে এসে মার খান যাত্রী পার্থপ্রতিম বারুই। এহেন তাণ্ডবের সময় টোল প্লাজার অন্যান্য কর্মী ও কর্তৃপক্ষ দর্শকের ভূমিকা নেন বলে অভিযোগ। সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কোনও সাড়া মেলেনি। প্রায় মিনিট কুড়ি পর্যন্ত তাণ্ডব চালানোর পরও বাস থেকে নেমে যায় টোলের কর্মীরা৷ পরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অ্যাম্বুল্যান্সে আক্রান্তদের দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ আ্যম্বুল্যান্সের কর্মীরাই ভরতি করেন।
[অধ্যক্ষের বদলি রুখতে রক্তাক্ত আন্দোলনে শামিল পলিটেকনিক পড়ুয়ারা]
যাত্রীরা অন্য বাস ধরে গন্তব্যে চলে গেলেও বেনাচিতি গামী বাসটি টোল প্লাজাতেই দাঁড়িয়েছিল। খবর পেয়ে বর্ধমান ও পানাগড় থেকে বাস মালিক সংগঠনের কর্তারা আসেন৷ পানাগড় বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক পরিমল মুখোপাধ্যায় জানান, “রীতিমতো গুন্ডাগিরি করেছে টোল প্লাজার কর্মীরা৷ বাসটি কোন আইনবিরুদ্ধ কাজ করেলে জরিমানা বা অন্য শাস্তি দিতে পারত৷ শুধু বাসকর্মীদেরই নয়, প্রতিবাদ করায় যাত্রীদেরও মারা হয়েছে৷ সঠিক মীমাংসা না হলে আমরা আইনের দারস্থ হব৷” টোল প্লাজার ম্যানেজার সুমিত মুখোপাধ্যায় জানান, “গতকাল বিকেলে ওই বাসের কর্মীরা টোলের কর্মীদের মারধর করেছে৷ তার জেরেই আজ কিছু হয়ে থাকতে পারে৷ আমোদের টোলের কর্মীরা যুক্ত থাকলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷” এই ঘটনার জেরে দু’নম্বর জাতীয় সড়কের বাঁশকোপা টোল প্লাজায় বেশ কিছুক্ষণ স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ ছিল।
