সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার ভারত-বাংলাদশ বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক। তার আগে রবিবার সকালে ফের ভারত বিরোধিতার সুর চড়ল পদ্মাপাড়ে। এদিন ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে মিছিল করল কোনও মৌলিবাদী সংগঠন নয়, বরং হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল খালেদা জিয়ার বিএনপি। যদিও নিরাপত্তার খাতিরে দূতাবাসের কাছে পৌঁছোনোর আগেই বিরাট মিছিলটিকে আটকে দেয় পুলিশ। এর পর একটি প্রতিনিধিদল ভারতীয় দূতাবাসে যায় এবং স্মারকলিপি জমা দেয়। স্মারকলিপিতে হাসিনার ভারতে 'নিরাপদ আশ্রয়' নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে খালেদার দল।
রবিবারের মিছিলে বিএনপির তিনটি শাখা, যথাক্রমে ছাত্র, যুব এবং স্বেচ্ছাসেবক দল যোগ দেয়। ঢাকার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয় মিছিল। রামপুরার কাছে ব্যারিকেড করে পুলিশ যা থামিয়ে দেয়। এদিন ভারতীয় দূতাবাসে বিএনপির প্রতিনিধি দলের জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে আগরতলায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসে হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি। খালেদার দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, ভারতের 'নিরাপদ আশ্রয়ে' থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থির করার চেষ্টা করছেন হাসিনা। এছাড়াও দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে স্মারকলিপিতে। মজবুত সম্পর্কের ক্ষেত্রে উভয় দেশের মধ্যে পারস্পারিক 'আস্থা', 'বিশ্বাস' এবং 'সম্মানে'র বিষয়টি জরুরি বলা হয়। যা সাম্প্রতিক টানাপোড়েনে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউনুস সরকারের আমলে মৌলবাদীদের উত্থান তৎসহ সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ঘৃতাহুতি পড়ে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারি, তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দেওয়া এবং তাঁকে জামিন না দেওয়ার ঘটনায়। এর পরেই ভারত সরকারের তরফে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। হিন্দু-সহ অন্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয় বাংদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে। পালটা বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকার জানায়, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত কোনওভাবেই নাক গলাতে পারে না। এইসঙ্গে দাবি করা হয়, সেখানে সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই রয়েছেন।
উত্তপ্ত আবহে আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসে ঢুকে পড়ে বিক্ষেভকারী একদল জনতা। যদিও এই ঘটনার নিন্দা করে ভারত। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারও করা হয়। যদিও ওপার বঙ্গে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা থামেনি। এই আবহে সোমবার বাংলাদেশের বিদেশ সচিবের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রীর। ঠিক তার আগে রবিবার বিএনপির এই মিছিল এবং স্মারকলিপি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।