shono
Advertisement
BCCI

প্রশাসনে প্রত্যাবর্তনের পথ খুলছে পুরনো প্রশাসকদের, সিএবি'তে মেয়াদ বাড়তে চলেছে স্নেহাশিসের

ছ'মাসের মধ্যে পূর্ণ কার্যকর হবে জাতীয় ক্রীড়া বিল।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 01:37 PM Aug 14, 2025Updated: 02:49 PM Aug 14, 2025

স্টাফ রিপোর্টার: আর মাত্র ছ'মাস। তার মধ্যে গোটা দেশের বিবিধ ক্রীড়া সংস্থায় কার্যকর হয়ে যাবে জাতীয় ক্রীড়া বিল। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যাওয়ার পর, যা এখন আইনে রূপান্তরিত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। লোকসভায় জাতীয় ক্রীড়া বিল পাশ হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তা রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে যায়। এ মুহূর্তে জাতীয় ক্রীড়া বিলের আইনে রূপান্তরিত হওয়া বাকি। দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বুধবার সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলে দিয়েছেন যে, বিবিধ নিয়মের 'ড্রাফটিং'-এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। "যত দ্রুত সম্ভব বিলকে কার্যকর করে দেওয়া হবে। আগামী ছ'মাসের মধ্যে বিলের একশো শতাংশ প্রয়োগ নিশ্চিত হয়ে যাবে," বলেছেন তিনি।

Advertisement

জাতীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোও এখন জাতীয় ক্রীড়া বিল কার্যকর হওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। যেমন ভারতীয় বোর্ড। লোধা সংস্কার আসার পর, এত দিন লোধা আইন মেনে চলত বোর্ড। লোধা আইন অনুযায়ীই আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বোর্ড নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া বিল আইনে পরিণত হয়ে কার্যকর হয়ে গেলে, ভারতীয় বোর্ডও তার আওতায় চলে আসবে। বোর্ড নির্বাচনও তখন জাতীয় ক্রীড়া বিলের নিয়ম অনুপাতে হবে। কিন্তু আসন্ন সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে কী করা হবে, সেটাই এখনও ধোঁয়াশায় মোড়া। মূল জিজ্ঞাস্য হচ্ছে, বোর্ড নির্বাচন কি তা হলে আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হবে? পিছিয়ে ক্রীড়া বিলের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন করা হবে? নাকি আপাতত লোধা আইন অনুযায়ী, নির্বাচন সম্পন্ন করে ফেলা হবে? পরে জাতীয় ক্রীড়া বিল এলে তখন নতুন করে কমিটি হবে?

অনেকেই মনে করছেন যে, প্রথমটা হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। কারও কারও ধারণা, ছ'মাসের মধ্যে ভারতীয় ক্রীড়া প্রশাসনে জাতীয় ক্রীড়া বিলের সম্পূর্ণ প্রয়োগের কথা বলা হলেও অত সময় লাগবে না। তার চেয়ে অনেক আগেই হয়ে যাবে সব কিছু। তাই তাড়াহুড়ো না করে একটু দাঁড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ, বোর্ড গঠনতন্ত্রেই রয়েছে যে, প্রয়োজনে তিন মাস পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে নির্বাচন। অর্থাৎ, আগামী সেপ্টেম্বরে ধার্য বার্ষিক সাধারণ সভা পিছিয়ে ডিসেম্বরে করা যেতেই পারে। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার অবস্থাও ভিন্ন নয়। কারণ, তাদেরও সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী পাট চুকিয়ে ফেলার কথা ছিল। সিএবি-ই যেমন আগাম ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন করবে বলে ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী হবে, কিছু বলা যাচ্ছে না। আপাতত সংস্থা 'ধীরে চলো' নীতিতেই চলবে বলে শোনা যাচ্ছে। ক্রীড়া বিল কবে থেকে কার্যকর হয়, বোর্ড কী করে, তার উপর সব কিছু নির্ভর করবে। কারণ নিয়মে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বদল আসছে।

যেমন? যেমন, লোধা আইনে যেসমস্ত ক্রীড়া প্রশাসকরা প্রশাসন থেকে সরে গিয়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দিচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া বিল। সিএবি-র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া, প্রাক্তন যুগ্ম সচিব তথা কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে, সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়, বাবলু কোলে-র মতো অনেক প্রাক্তন পদাধিকারীর সামনেই ফের প্রশাসনে ফিরে আসার দরজা খুলে দেওয়ার পথে জাতীয় ক্রীড়া বিল। এবং অবশ্যই সিএবি-র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি ইতিমধ্যে সিএবি নির্বাচন পদে দাঁড়াবেন বলে ঘোষণা করেছেন। জাতীয় ক্রীড়া বিল আসার আগে থেকেই সৌরভ নির্বাচনযোগ্য ছিলেন। অভিষেকও বাধ্যতামূলক তিন বছরের 'কুলিং অফ' পর্ব শেষ করে ফেলেছেন। তবে বিশ্বরূপ দে আর সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়কে সিএবি প্রশাসন থেকে সরে যেতে হয়েছিল লোধা আইন মেনে। কারণ, লোধা আইন অনুযায়ী, বোর্ড বা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় ন'বছরের বেশি থাকার কারও অনুমতি ছিল না। কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া বিলে সে সমস্ত ব্যাপার নেই।

ক্রীড়া বিল অনুযায়ী, জাতীয় ক্রীড়া সংস্থায় নির্বাচনযোগ্য হতে গেলে তিনটে শর্তের একটা পূরণ করলেই চলবে। এক, স্পোর্টসপার্সন অফ আউটস্ট্যান্ডিং মেরিট হতে হবে। দুই, এক্সিকিউটিভ কমিটিতে একটা টার্ম (চার বছর) থাকতে হবে। তিন, রাজ্য সংস্থার প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি জেনারেল বা কোষাধ্যক্ষ হতে হবে। একই সঙ্গে একটানা প্রশাসনে বারো বছর থাকা যাবে। তার পর চার বছরের 'কুলিং অফ'। এবং সেই 'কুলিং অফ' পর্ব কাটিয়ে ফের ফিরে আসা যাবে। প্রশাসকদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও সত্তর থেকে বাড়িয়ে পঁচাত্তর করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, অনেক পুরনো প্রশাসকরা যেমন সিএবি-তে ফিরে আসার সুযোগ পাচ্ছেন, ঠিক তেমনই যাঁরা এতদিন ছিলেন, যাঁদের লোধা নিয়ম অনুযায়ী কুলিং অফে চলে যেতে হত, তাঁদের মেয়াদও বেড়ে যাচ্ছে। সিএবি-র বর্তমান প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ই যেমন ফের নির্বাচনযোগ্য। ক্রীড়া বিল অনুযায়ী, তাঁর মেয়াদ বেড়ে যাবে। এমতাবস্থায় আজ সিএবি-র অ্যাপেক্স কাউন্সিল বৈঠক। দেখা যাক, সেখানে কী হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • লোকসভায় জাতীয় ক্রীড়া বিল পাশ হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তা রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে যায়।
  • লোধা সংস্কার আসার পর, এত দিন লোধা আইন মেনে চলত বোর্ড।
  • লোধা আইন অনুযায়ী, বোর্ড বা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় ন'বছরের বেশি থাকার কারও অনুমতি ছিল না। কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া বিলে সে সমস্ত ব্যাপার নেই।
Advertisement