এই সময় ওয়ার্ডরোবে কী কী রাখবেন? সোহিনী সেনের টিপস
বৃষ্টি আসার সময় হয়ে গেল, তবু মধ্যাহ্নের কলকাতা যেন ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালি! ছাতায় রোদ আটকাচ্ছে, ঘাম নয়। ফেশিয়াল ওয়াইপে ঘাম আটকাচ্ছে, অস্বস্তি নয়। তবু তাপিত প্রাণকে ফর দ্য টাইম বিয়িং ক্লান্তি আর শ্রান্তিহীন রাখাই যায়।
সাদা পোশাক
এই সময় ‘হোয়াইট’ ইজ দ্য ওনলি ‘ভার্সেটাইল’ থিং। সাদা রং তাপ ছড়িয়ে দিয়ে শরীরকে সাধারণ উষ্ণতার সঙ্গে জুঝিয়ে চলতে সাহায্য করে। ফ্যাশন দুনিয়ায় সাদা পোশাক ‘ইনস্টা-এয়ারিনেস’-এর নামান্তর। টি-শার্ট হোক বা কুর্তা, শাড়ি বা শার্ট, চুড়িদার বা পাঞ্জাবি- রেগুলার ওয়্যারে যেটায় আপনি স্বচ্ছন্দ তা সাদা রঙের কয়েকটা কিনে রাখুন।
স্ট্র্যাপ শু
শীতকালে অধিকাংশ ডাক্তার মোজা পরতে বলেন। বা পা-ঢাকা জুতো। পা’টা ঢাকা থাকলে নাকি ঠান্ডা তুলনামূলক কম লাগে। গরমকালে যে তার উলটো থিয়োরি প্রযোজ্য হবে বলাই বাহুল্য। তাই টু স্ট্র্যাপ স্যান্ডল, অ্যাঙ্কল বাকল গ্ল্যাডিয়েটর, স্লাইডস বা পাতি কিটো- ছিমছাম কিছু পরুন। পা যাতে না ঘামে, তাতে যথেষ্ট হাওয়া খেলে যেন।
বয়ফ্রেন্ড জিন্স
স্কিনি, ন্যারো ফিটেড, পেনসিল বা সিগারেট কাট গরমে অবশ্য-বর্জনীয়। শেপ্ড হয় বলে যে কোনও জিন্সপ্রেমীর এগুলো পয়লা পছন্দ। কিন্তু বোশেখ-জ্যৈষ্ঠে ত্রাতারূপে আদতে কাজ করে ‘বয়ফ্রেন্ড জিন্স’। পাশ্চাত্যে ছেলেদের ঢিলেঢালা ট্রাউজার পরার ট্রেন্ড থেকে ‘বয়ফ্রেন্ড জিন্স’-এর নামের বুৎপত্তি। খানিকটা ব্যাগি প্যান্টের মতো। ক্যাজুয়াল, কমফর্টেবল এবং ‘ওহ্, সো কুল’ এই বয়ফ্রেন্ড জিন্স এখন ওয়ার্ডরোবে মাস্ট হ্যাভ।
স্ট্র হ্যাট
সান সেফটি এবং ফ্যাশন- দ্বিবেণী সঙ্গম রক্ষা করতে এই বিষয়টির জুড়ি মেলা ভার। সরাসরি চড়া রোদ থেকে মুখের ত্বককে বাঁচায়। মুখের ক্ষেত্রে অন্তত সানস্ক্রিনের প্রক্সি দেয় বলে দাবি করাই যায়।
সানগ্লাস
দ্য পারফেক্ট ফিনিশার। আন্দ্রে রাসেলের শেষ বলে ছক্কার মতো। অ্যাভিয়েটর, লুক চিক, ক্যাট আই- মুখের আকৃতির সঙ্গে মানানসই যেটা সে রকম এক বা একাধিক কিছু ওয়ার্ডরোবে রাখুন।
[ আরও পড়ুন: কেমন হবে জামাইষষ্ঠীর সাজ? রইল ফ্যাশন ডিজাইনারের টিপস ]
গরমে জিম-গাইড- কুন্তল রায়ের (গোল্ড জিম) টিপস
- জিমে এসি থাকা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে দরকার একজন অভিজ্ঞ ট্রেনার। কারণ এই গরমে এক্সারসাইজ করার সময় মাসল পুল বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার প্রবণতা থাকে।
- কোনও সেলিব্রিটির ওয়ার্কআউট রেজিম দেখে এক্সারসাইজ করবেন না। আপনার ট্রেনার যেটা বলছেন, সেই রেজিম ফলো করুন।
- প্রচুর ঘাম বেরোলেই বেশি ওজন কমবে, সেই কনসেপ্ট ভুল।
- গরমে মোবিলাইজেশন (শোলডার রোলিং, জয়েন্টের এক্সারসাইজ ইত্যাদি) ভাল করে করুন।
- এক্সারসাইজ করতে করতে এক সিপ করে নর্ম্যাল টেম্পারেচারের জল খেতে পারেন।
- এক্সারসাইজ শেষে কুল ডাউন এবং স্ট্রেচিং করা খুব উপকারি।
- এক্সারসাইজ শুরুর আধ ঘণ্টা আগে হালকা কিছু খেয়ে নিন।
- রোদ এড়াতে ভোরের দিকে মর্নিং ওয়াক করুন। নাহলে সন্ধেবেলা।
- আমরা বলি, রেস্ট ইজ অ্যান ইম্পর্ট্যান্ট পার্ট অফ ইওর এক্সারসাইজ। তাই গরমে একদিন হেভিওয়েট এক্সারসাইজ করলে পরের দিন ফ্রিহ্যান্ড বা হালকা এক্সারসাইজ করুন।
[ আরও পড়ুন: শরীরে এদিক-ওদিক থেকে উঁকি মারছে অতিরিক্ত মেদ? ব্যবহার করুন শেপওয়্যার ]
মেকআপ হোক হালকা আর ন্যাচারাল, মৈনাক দাসের (মেকআপ আর্টিস্ট) টিপস
- প্যাচপ্যাচে গরমে মেকআপ করার আগে ভাল করে মুখ ধুয়ে রবফ কমপ্রেস করুন। এতে ঘাম কম হবে।
- তারপর ব্র্যান্ডেড অয়েল ফ্রি প্রাইমার লাগান। এখন দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রাইমার বাজারে পাওয়া যায়। স্কিন টাইপ দেখে কিনে নিন।
- কুশন ফাউন্ডেশন গরমে খুব ভাল কাজ করে। ফাউন্ডেশন লাগিয়ে মুখে হালকা পাউডার পাফ করুন। ম্যাজিকটা হাতেনাতে টের পাবেন।
- ফাউন্ডেশনের পর ম্যাট মেকআপ ফিক্সার ব্যবহার করুন। এতে মেকআপ মুখে ভাল বসবে। ন্যাচারাল লুক দেয় এই ফিক্সার।
- গরমে আইশ্যাডো ব্যবহার না করাই ভাল। সন্ধের পার্টিতে গেলে বেছে নিন ন্যাচারাল রং। যেমন হালকা পিঙ্ক বা ব্রাউন। রিং ফিঙ্গারের ডগায় আইশ্যাডো নিয়ে আইলিডে হালকা ঘষে নিন।
- আইশ্যাডো হালকা হলেও মাসকারা হবে পুরু।
- কাজল পরার অভ্যেস থাকলে তা অবশ্যই হতে হবে স্মাজপ্রুফ। চোখের ওয়াটার লাইনে কাজল লাগালে গরমে ছড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কম থাকবে।
- ব্লাশারের রংও হবে ন্যাচারাল। ব্লাশার না থাকলে হালকা লিপ টিন্ট বা লিপস্টিক দিয়ে চিকবোনে লাগিয়ে নিন।
- গরমে হাইলাইটার না দেওয়াই ভাল। রাতের অনুষ্ঠানে লিকুইড হাইলাইটার ব্যবহার করতে পারেন। গায়ের রং চাপা হলে হাইলাইটার হবে গ্লোডেন। নাহলে সিলভার টোন মানাবে।
- ন্যাচারাল হালকা শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করুন। গরমে খুব ডিপ শেডের কোনও কিছুই ভাল লাগে না।
- ইদানীং মোটা বা পুরু ঠোঁট ট্রেন্ডি। অনেকে পুরু ঠোঁট পেতে ডাক্তারের চেম্বারে ছুটছেন। সে সব না করতে চাইলে লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপ স্ক্রাব ব্যবহার করুন। বাজারে ভাল ব্র্যান্ডের লিপ ভলিউম কিনতে পাওয়া যায়। এটা লাগানোর দশ মিনিট পর লিপস্টিক দিন।
- দিনের শেষে মেকআপ রিমুভ করাটাও খুব জরুরি। নারকোল তেল দিয়ে মেকআপ তুলতে পারেন। না হলে মেকআপ রিমুভার মুখে স্প্রে করে তুলো দিয়ে ঘষে মেকআপ তুলুন।
- গরমে ত্বককে পুষ্টি দিতে মুখে তরমুজ লাগাতে পারেন। প্রচুর জল খান। গরমে মেকআপ ধরে রাখতে হলে স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে হবে। সেই সঙ্গে দরকার সাত-আট ঘণ্টা ঘুম।
The post টাইট জিনস নয়, মেকআপ হোক ন্যাচরাল- গরমে সাজগোজের টিপস দিলেন বিশেষজ্ঞরা appeared first on Sangbad Pratidin.