সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোরপোশ মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। খোরপোশের অঙ্ক নির্দিষ্ট হতে পারে না। সেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তনশীল। বুঝিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। বাংলারই এক বিচ্ছেদ মামলায় শীর্ষ আদালত বলল, খোরপোশের অঙ্কটা বিচ্ছেদের আগে স্ত্রীর জীবনযাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টে বাংলার এক দম্পতির খোরপোশ সংক্রান্ত মামলা চলছিল। যে দম্পতির মামলা, তাঁদের বিয়ে হয় ১৯৯৭ সালে। ১৯৯৮-এ এক ছেলেও হয়। ১০ বছরের মাথায় তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন। রায় স্ত্রীর পক্ষে যায়। ২০১৬-তে কলকাতা হাই কোর্ট স্থায়ী খোরপোশ ঠিক করে মাসিক ২০ হাজার টাকা। যা ৩ বছর পর ৫ শতাংশ বাড়ার কথা ছিল। এরপর মহিলা খোরপোশ বাড়ানোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। ৯ বছর বাদে এই মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মামলার শুনানিতে স্বামী জানান, তাঁর বর্তমান আয় ১,৬৪,০৩৯ টাকা। তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছেন, পরিবার ও বৃদ্ধ মা-বাবার দায়িত্ব আছে। তাই অতিরিক্ত খোরপোশ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, স্বামীর উপর নির্ভরশীল মহিলারা বিচ্ছেদের পরও সেই ধরনের জীবনযাপন করার অধিকারী, যে ধরনের জীবনযাপন তিনি বিয়ের পর করতেন। বিবাহিত জীবনের মান ও বর্তমান জীবনধারা অনুযায়ী ঠিক হওয়া উচিত খোরপোশের অঙ্ক। সুপ্রিম কোর্ট ঠিক করেছে, ওই মহিলা ৫০ হাজার টাকা খোরপোশ পাবেন। প্রতি ২ বছর অন্তর ৫ শতাংশ হারে সেটা বৃদ্ধি পাবে। এখানেই শেষ নয়, ওই ব্যক্তির নামে যে ফ্ল্যাট আছে সেটাও হোম লোন শোধ করে অর্ধেক স্ত্রীর নামে দিতে হবে।
ওই মহিলা ছেলের জন্যও খোরপোশ দাবি করেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি দাবি করেন, ছেলের এখন বয়স ২৬। সে স্বাবলম্বী। তাই তাঁকে খোরপোশ দেওয়ার মানে হয় না। সুপ্রিম কোর্ট সেই যুক্তি মেনে নিয়েছে। তবে আদালত জানিয়ে দিয়েছে, খোরপোশ না পেলেও উত্তরাধিকার সূত্রে পারিবারিক সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার তাঁর আছে।