সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তেলেঙ্গানার মরণফাঁদে আটকে থাকা ৮ শ্রমিককে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ। তবে আশা ছাড়ছেন না উদ্ধারকারীরা। ধ্বংসস্তূপের শেষ ৪০ মিটার পার করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উদ্ধারকারীদের কাছে। জল-কাদা ভেঙে এই অসাধ্য সাধন করতে সুড়ঙ্গে নামানো হয়েছে বিশেষ যন্ত্র। এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরার মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতর নজরদারি চালানো হচ্ছে। এছাড়াও ব্যবহার করা হচ্ছে রোবোটিক ক্যামেরা।
উদ্ধার অভিযান প্রসঙ্গে সোমবার নগরকুরনুলের জেলাশাসক বি সন্তোষ বলেন, "গতকাল শেষ ৪০ মিটার পৌঁছতে পারিনি আমরা। উদ্ধারকারী দল আজ একটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ওই অংশে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে। একইসঙ্গে ভিতর থেকে পাম্পিংয়ের মাধ্যমে জল বের করার কাজ চলছে জোরকদমে।" এদিকে উদ্ধারকাজের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী জুপালি কৃষ্ণ রাও বলেন, যে আটজন ভিতরে আটকে পড়েছেন তাঁদের বেঁচে থাকার আশা অত্যন্ত ক্ষীণ। তবে সামান্য আশার আলো থাকলেও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাব আমরা। যেখানে শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন সেই অংশে অত্যন্ত জটিল।" মন্ত্রী আরও জানান, যারা আটকে পড়েছেন তাঁদের ৪জন শ্রমিক। দুজন একটি সংস্থার কর্মী ও দুজন আন্তর্জাতিক কর্মী।
গত শনিবার সকালে তেলেঙ্গানার নগরকুরনুল জেলার শ্রীসাইলাম ড্যামে অবস্থিত সুড়ঙ্গের মধ্যে লিকেজ সমস্যা সারাই করতে গিয়েছিলেন একদল শ্রমিক। সুড়ঙ্গের প্রায় ১৪ কিলোমিটার ভিতরে হঠাৎ ধস নামে ছাদে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার জেরে অন্তত ৮ জন ভিতরে আটকে পড়েন। প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী, ছাদের প্রায় ১০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ে যার জেরে প্রায় ২০০ মিটার এলাকায় কাদামাটি ছড়িয়ে পড়েছে। জানা যাচ্ছে, দিনচারেক আগেই খোলা হয়েছিল সুড়ঙ্গটি। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় জেলাশাসক বি সন্তোষ বলেন, যাঁরা আটকে পড়েছেন তাঁদের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এমনকী ভিতরের এয়ার চেম্বার ও কোনভেয়ার বেল্ট পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শ্রমিকদের সাড়া পেতে তাঁদের নাম ধরে ডাকা হচ্ছিল। তবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার মধ্যে উদ্ধারকারীদের আশা, এখনও দুর্ঘটনাস্থলের ২০০ মিটারের মতো অংশ এখনও টিকে রয়েছে। সেখানে শ্রমিকরা থাকলেও থাকতে পারেন।
গতকাল উদ্ধারকারী দলের আধিকারিক শ্রীনিবাস রেড্ডি জানিয়েছিলেন, “সুড়ঙ্গের ১১ কিমি পর্যন্ত জলে ভরে গিয়েছে। এই অবস্থায় শ্রমিকদের বাইরে আসার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। যদিও আমরা চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছি না। রবিবার স্থানীয় জেলাশাসক বি সন্তোষ জানান, আমাদের উদ্ধারকারী দল ইতিমধ্যেই সেই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যেখানে ‘টানেল বোরিং মেশিন’ কাজ করছিল। যদিও প্রচুর কাদা থাকার কারণে আগে যাওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।" শ্রমিকদের উদ্ধারে দুর্ঘটনাস্থলে কাজ করছে এনডিআরএফের ৪টি দল, সেনার ২৪ জন জওয়ান, এসডিআরএফ ও এসসিসিএল-এর ২৩ বিশেষজ্ঞ কর্মী।
