ইস্টবেঙ্গল: ০
ওড়িশা এফসি: ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচের রিমেক। মরণপণ লড়াই। জমাট রক্ষণ। এবং সঙ্গে দারুণ গোলকিপিং। ইস্টবেঙ্গল গোল না করতে পারলেও, নিজেদের জালে বল ঢোকানোর প্রশ্নই নেই। অন্যদিকে ওড়িশা এফসি অ্যাওয়ে ম্যাচে গোলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও, ড্র করার মরিয়া চেষ্টা। শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বরের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দুই প্রতিপক্ষ এভাবেই ধরা দিল। যদিও শেষ দিকে লাল-হলুদের তরফ থেকে হ্যান্ডবলের আবেদন করা হয়। জ্যাভিয়ের শট মারলে সেই রানিং বল বিপক্ষের ডিফেন্ডারের হাতে লাগে। তবে সেটা নাকচ করে দেন রেফারি। সেটা না হলে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তেই পারত ইস্টবেঙ্গল।
আর তাই চলতি আইএসএলে আরও একবার গোলশূন্য ড্র করে মাঠ ছাড়ল কার্লেস কুয়াদ্রাতের লাল-হলুদ। একইসঙ্গে এই নিয়ে পরপর পাঁচ ম্যাচে হারের মুখ দেখল না ইস্টবেঙ্গল। একইসঙ্গে পরপর চার ম্যাচে ক্লিনশিট করলেন নিশু কুমার- মান্দার রাও দেশাইরা। তবে বিপক্ষ দলও তো সেই এক পয়েন্টই আদায় করল। তাই ওড়িশার কোচ সের্জিও লোবেরা কলার তুলতেই পারেন।
ম্যাচের আগেই লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ বলে দিয়েছিলেন যে, তাঁর মূল চিন্তার কারণ দীর্ঘদিনের বন্ধু সের্জিও লোবেরা। চলতি মরশুমের শুরুতে ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়ার দৌড়ে প্রবলভাবে ছিলেন লোবেরা। শেষ পর্যন্ত তিনি ওড়িশা যাওয়ায় লাল-হলুদের দায়িত্বে আসেন আরেক স্প্যানিশ কুয়াদ্রাত। এহেন লোবেরা সাইডলাইন থেকে তাঁর ফুটবলারদের দারুণভাবে পরিচালনা করলেন। ফলে একের পর এক চেষ্টা করেও, গোলের মুখ খুলতে পারলেন না ক্লেটন-বোরহারা।
[আরও পড়ুন: সাক্ষীর পর এবার প্রতিবাদী বজরং, ব্রিজভূষণ ঘনিষ্ঠ নির্বাচন জিততেই ফেরালেন পদ্মশ্রী]
এমনিতে আইএসএলের ইতিহাসে ওড়িশার বিরুদ্ধে লাল-হলুদের পরিসংখ্যান ভালো নয়। এই ম্যাচের আগে এগিয়ে ছিল পাশের রাজ্য। গত ৬ ম্যাচে ৫-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ওড়িশা। যদিও অনেকেই মনে করেছিল মুম্বইয়ের ডেরায় গিয়ে ড্র করে আসা, এবং এর আগে ঘরের মাঠে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া লাল-হলুদ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ওড়িশার বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট তুলে নেবে। কিন্তু তেমনটা হল কোথায়! সবকিছুই হল। তবে গোলের মুখ খুলতে পারল না কোনও দলই।
৯০ মিনিটের যুদ্ধে অনেক মশলা মজুদ ছিল। একদিকে ঘরের মাঠে ক্লেটন সিলভা, নন্দকুমার। বিপক্ষের আবার রয় কৃষ্ণা, আহমেদ জাহুর মতো তারকা। তবে প্রথমার্ধে গোলের দেখা নেই। দুই দলের তারকা স্ট্রাইকাররা শুধু একের পর এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করলেন। মন্দ ভাগ্যের জন্য অবশ্য কয়েকটা শট পোস্টের গায়ে লেগেও চলে গেল। তবে তাই বলে দুই দলের দুই গোলকিপার প্রভসিমরণ সিং গিল ও অমরিন্দর সিংয়ের লড়াইকে খাটো করে দেখা উচিত নয়। নজর কাড়লেন দুই দলের শেষ প্রহরী। ফলে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অবশ্য হ্যান্ড বলের জন্য আবেদন করেছিল লাল-হলুদ। নাওরেম মহেশ শট মারলে সেই রানিং বল বিপক্ষের লেনি রড্রিগেজের ডান হাতের কনুইতে লাগে। যদিও লাল-হলুদের অনুকূলে সিদ্ধান্ত দিতে অস্বীকার করেন রেফারি। এর পর দুই দল গোল করার একাধিক চেষ্টা করলেও, কেউ বিপক্ষের জালে বল জড়াতে পারেনি।
তবে স্বস্তির খবর হল, শেষ পাঁচ ম্যাচে হারের মুখ দেখেনি কুয়াদ্রাতের লাল-হলুদ। বিপক্ষের গোলে বল না জড়াতে পারলেও, দলের রক্ষণও বেশ ভালো খেলছে। সুতরাং লাল-হলুদ সমর্থকরা আগামী দিনে আশার আলো দেখতেই পারেন।