সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মেরে ড্যাড কি দুলহান’। বাবার নিঃসঙ্গতা দূর করতে এক মা’কে বাড়ি আনতে চায় মেয়ে। এককথায়, বাবার বিয়ে দিতে চায় সে। এমনই কাহিনি ফুটে ওঠে হিন্দি এই ধারাবাহিকটিতে। কিন্তু রিল লাইফের গল্পও তো রিয়েল লাইফের দুষ্টু-মিষ্টি ঘটনা অবলম্বনেই গড়ে ওঠে। আবার কখনও রিল লাইফ থেকেও অনুপ্রাণিত হয় বাস্তব জীবন। এক্ষেত্রেও সেই রিল আর রিয়েল মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল, যখন সায়ন তাঁর ৬৬ বছরের বাবার ধুমধাম করে বিয়ে দিলেন। খাস কলকাতার রচিত হল রূপকথার কাহিনি। সম্পূর্ণ হল পরিবার।
কলকাতার (Kolkata) বাসিন্দা তরুণ কান্তি পাল জীবনের ৬৬টি বসন্ত কাটিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু স্ত্রী গত হওয়ার পর গত দশ বছর ধরে তিনি বড্ড একা। আর চাকরি সূত্রে ছেলে সায়ন কানাডায় থাকায় নিঃসঙ্গতা আরও আঁকড়ে ধরে তাঁকে। কিন্তু পথের বাঁকে যে বাঁচার নতুন রসদ অপেক্ষা করেছিল, তা কল্পনাও করতে পারেননি তরুণ কান্তিবাবু। তাঁর আদিবাড়ি ভট্টনগরে। বছর দুয়েক আগে অবসর নেওয়ার পর সেখানেই থাকতেন। রোজ নিয়ম করে গ্রামের রামকৃষ্ণ মঠে সকাল-বিকেল হাঁটতে যেতেন। আর সেখানেই জন্ম নিল নতুন এক প্রেম কাহিনির। আলাপ হয় বছর তেশট্টির স্বপ্না রায়ের সঙ্গে। আলাপ যে কখন অনুরাগে বদলে যায় টের পাননি তাঁরা।
[আরও পড়ুন: মালদহ জেলা তৃণমূল সভানেত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন? মুখ খুললেন মৌসম বেনজির নূর]
কিন্তু এই বয়সে নতুন সংসার পাতলে কি সমাজ মেনে নেবে? তিরষ্কারে জর্জরিত হতে হবে না তো? এসব নানা ভাবনা একটা সময় পাক খেয়েছিল মাথায়। কিন্তু ছেলে সায়ন তা প্রশ্রয় দিতে দেননি। বরং বাবার বিয়ের ধুমধাম করে আয়োজন করে ফেলেন। সমাজের তথাকথিত ভাবনা থেকে বেরিয়ে বাবার বিয়ে দিয়ে নিজের জন্য মা আনেন বাড়িতে। গত ২৫ নভেম্বর চার হাত এক নয় তরুণ কান্তি পাল ও স্বপ্না রায়ের। দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতেই বিয়ে সারেন তাঁরা। আর এই খুশির খবর ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সায়ন। যা মুহূর্তে মন ছুঁয়ে যায় নেটিজেনদের। সকলেই নবদম্পতিকে আগামিদিনের শুভেচ্ছা জানান। অগণিত মানুষের ভালবাসা আর শুভেচ্ছা পেয়ে আপ্লুত সায়নও। নিজেই বলছেন, এভাবে অভিনন্দনের জোয়াড় বয়ে যাবে, ভাবতেই পারেননি। সেই সঙ্গে জানান, অবশেষে বাবা নিজের জন্য সঙ্গী পাওয়ায় পূর্ণতা পেল তাঁর পরিবার। তাই দারুণ খুশি তিনি।
তরুণ কান্তি পাল ও স্বপ্না রায়কে নতুন জীবনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা।