shono
Advertisement

এবার রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া মেমারিতে, দিদির মৃতদেহের সঙ্গে ৫ দিন কাটালেন বোন

দেহ পচে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় প্রতিবেশীরা ঘটনাটি জানতে পারেন।
Posted: 09:37 PM Mar 10, 2022Updated: 09:40 PM Mar 10, 2022

অর্ক দে, বর্ধমান: দিদির মৃতদেহের সঙ্গেই পাঁচদিন ঘরে কাটিয়েছেন ছোট বোন। ঘরের ভিতর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতেই এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ঘরের ভিতর থেকে মহিলার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পূর্ব বর্ধমানে (East Burdwan) মেমারির কৃষ্ণ বাজার এলাকার ঘটনায় রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া দেখছেন অনেকে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারির (Memari) ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় একটি দোতলা বাড়িতে সুপ্তিকণা কোলে ও মুক্তিকণা কোলে নামে দুই বোন থাকতেন। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির বাইরে থেকে দুর্গন্ধ পান এলাকার বাসিন্দারা। পরে মেমারি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে সুপ্তিকণা কোলের(৫২) পচা দেহ উদ্ধার করে। সেই সময় বোন মুক্তিকণা বাড়িতে ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে।

[আরও পড়ুন: বিধানসভা ভোটে অভিষেকেই ছক্কা যোগীর, পৃথক আসনে লড়েও ‘হারালেন’ অখিলেশকে]

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দুই বোন পাশের একটি আশ্রম থেকে প্রতিদিন খাবার নিয়ে আসতেন। দুই বোনের মধ্যে কেউই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সচরাচর মিশতেন না। বরং তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে দুর্ব্যবহার করত বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। এই বাড়ির পিছনে একটি আশ্রম রয়েছে। যে আশ্রমের জায়গা তাঁদের বাবা তিনকড়ি কোলে একসময় দান করে দিয়েছিলেন। এই আশ্রম থেকেই খাবার নিয়ে আসতেন দুই বোন। বাড়িতে তাদের কোনও পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। এলাকাবাসী ও আশ্রমের তরফ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য তাঁদের বললেও তাতে রাজি হননি দুই বোম। মোমবাতি জ্বালিয়েই সন্ধে কাটাতেন।

[আরও পড়ুন: পাঁচ রাজ্যের ফলের পর গেরুয়াময় ভারতের মানচিত্র, এক নজরে দেখে নিন কার দখলে কোন রাজ্য]

আশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, মোমবাতির খরচ বাবদ আশ্রমের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে দেওয়া হত তাঁদের। কয়েকদিন ধরে আশ্রম থেকে খাবার নিচ্ছিলেন না সুপ্তিকণা বা মুক্তিকণা – কেউই। বুধবার রাত্রে মুক্তিদেবী আশ্রমে গেলে তাঁর কাছে দিদির বিষয়ে জানতে চান আশ্রমিকরা। তখন সে জানায়, দিদি বাড়িতে আছে কিন্তু কথা বলছে না। এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে তালা দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। আশ্রমের আবাসিক ও প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে বাড়ির ভিতর থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,কয়েক দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে সুপ্তিকণা দেবীর। দেহ পচে গিয়ে দেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। পুরো বিষয়টির তদন্ত করছে মেমারি থানার পুলিশ।

মৃতার বাবা তিনকড়ি কোলে বলেন, ‘‘আমার তিন মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ের দুর্গাপুরে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বছর আটেক আগে ছেলে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। দুই মেয়ে সুপ্তি ও মুক্তি মেমারির এই বাড়িতেই থাকত। এদিন এসে জানতে পারি সেজো মেয়ে সুপ্তি মারা গিয়েছে।” এসডিপিও বর্ধমান (দক্ষিণ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দারা খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে মহিলার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিক অনুমানে অসুস্থতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ময়ানাতদন্তের রিপোর্ট এলে বিষয়টি স্পষ্ট জানা যাবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার