সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত হওয়ার পরই ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই ইচ্ছে যে প্রবল, তা ক্রমশই পরিষ্কার হচ্ছে। ডেনমার্কের উপরে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছেন তিনি। একই ভাবে কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম প্রদেশ করা কিংবা পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার দখলে নেওয়ার ইচ্ছেও তাঁর প্রবল।
আসলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম পর্যায়েও ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের অংশবিশেষ কিনতে চেয়েছিলেন। ডেনমার্কের অন্তর্গত ৭ লক্ষ ৭২ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার গ্রিনল্যান্ড একটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল৷ গত শতকের নয়ের দশকেও এই ভূখণ্ড কেনার চেষ্টা চালিয়েছিল আমেরিকা। উল্লেখ্য, ১৮৬৭ সালের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টা করেছে বা বিষয়টি বিবেচনা করেছে। গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অংশ, তবে এর ইউরোপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এবং এটি ডেনমার্কের মাধ্যমে ইইউ ব্লকের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ওভারসিজ টেরিটরি হিসেবে ইউরোপীয় তহবিল পেয়ে থাকে।
কিন্তু কেন? কেন গ্রিনল্যান্ড কিনতে এত মরিয়া আমেরিকা? ট্রাম্প জানিয়েছেন, জাতীয় প্রতিরক্ষার কারণেই মূলত গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ করতে চান তিনি। এবং এর ফলে গ্রিনল্যান্ডে রাশিয়া ও চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবও অস্তমিত হবে। আসলে গ্রিনল্যান্ডে প্রচুর ধাতু রয়েছে, যা প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে জরুরি উপাদান। এর মধ্যে মোবাইল, ইলেকট্রিক গাড়ি, অস্ত্রশস্ত্রে ব্যবহৃত হওয়া বিরল ধাতুও রয়েছে। চিন যেখানে এই ধরনের ধাতুর ভাণ্ডার হওয়ায় আধিপত্য জারি করে রেখেছে, সেখানে গ্রিনল্যান্ড হাতে পেলে আমেরিকার প্রভাব আরও বাড়বে। এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের সম্পদের মূল্য ১.১ ট্রিলিয়ন ডলার হতে পারে।
গ্রিনল্যান্ড মূলত আর্কটিকের অংশ। যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে এবং সম্পদের জন্য বিভিন্ন জাতির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। রাশিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিনল্যান্ডের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন পর্যন্ত অঞ্চল দাবি করার চেষ্টা করেছে। গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে সোনা, রুপা, তামা এবং ইউরেনিয়াম এবং এই অঞ্চলের জলে তেলের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।