সন্দীপ্তা ভঞ্জ: বৃহস্পতিবার রিলিজ করল হৃতিক-দীপিকার (Hrithik Roshan, Deepika Padukone) বহু প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘ফাইটার’। দেশপ্রেমের আঁধারে তৈরি এই ছবি সাধারণতন্ত্র দিবসের আবহেই মুক্তি পেল। কেমন হল অ্যারিয়াল অ্যাকশন থ্রিলার ‘ফাইটার’ (Fighter Review)?
সিনেমার চিরাচরিত প্লট। ভারত-পাকিস্তানের শত্রুতা। সন্ত্রাস। এমন গল্প দর্শকদের কাছে নতুন নয়। সেই কবে থেকেই বলিউডি পর্দায় ভারত-পাক সম্পর্কের টানাপোড়েন, শত্রুতার গল্প উঠে আসছে। ‘ফাইটার’ ছবিতে সিদ্ধার্থ আনন্দ নতুনত্ব কিছু দেখাননি! সেই চেনা ছকে খেলেছেন পরিচালক। ট্রেলারে যতটা আশা জাগিয়েছিলেন, বড়পর্দায় গোটা সিনেমা দেখার সময়ে সেরকম অ্যাড্রিনালিন রাশ হল না বটে! তবে যুদ্ধবিমানের চেসিং সিকোয়েন্স দারুণ।
২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার গল্পের প্রেক্ষাপটেই চিত্রনাট্য সাজানো হয়েছে। বদলার বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের কাহিনিও রয়েছে ‘ফাইটার’ ছবিতে। জইশ-ই-মুহম্মদের ঘাঁটিতে যে সাহসিকতার সঙ্গে ভারতীয় এয়ার ফোর্স হামলা চালিয়েছিল সেই ঘটনাও রয়েছে। তবে সমস্ত উপকরণ থাকলেও রান্না ঠিক জমল না! বাস্তব ঘটনার আঁধারে সাজানো চিত্রনাট্যে টুইস্ট দেওয়ার বহু জায়গা ছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রেও হতাশ হতে হয়েছে। কিছু কিছু দৃশ্যে দেশপ্রেমের থেকেও রোম্যান্স প্রাধান্য পেয়েছে। তবে বড়পর্দায় রগরগে অ্যাকশন সিকোয়েন্স দেখতে মন্দ লাগেনি বটে। ভিজ্যুয়ালি দারুণ, তবে আবেগ অগভীর।
এবার আসা যাক অভিনয়ের কথায়। ‘ফাইটার’-এর কাস্টিং দেখে প্রত্যাশার পারদ চূড়ান্ত ছিল। হৃতিক রোশনের সঙ্গে দীপিকা পাড়ুকোনের অনস্ক্রিন রোম্যান্স দেখার জন্য দর্শকরা যেভাবে মুখিয়ে ছিলেন, সিদ্ধার্থ কিন্তু এক্ষেত্রে হতাশ করেননি। দুই তারকাই ‘ডিরেক্টরস অ্যাক্টর’। যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন গোটা শো টেনে নিয়ে যাওয়ার। স্কোয়াড্রন লিডার সামশের পাঠানিয়ার ভূমিকায় হৃতিকের লুকই বাজিমাত করেছে। এর আগেও অবশ্য করণ শেরগিল, কবীর ধালিওয়ালের ভূমিকায় চমকে দিয়েছিলেন তিনি। এদিকে ‘পাঠান’-এ সিক্রেট এজেন্টের পর দীপিকা পাড়ুকোন এবার যুদ্ধবিমানের পাইলট হিসেবে ধরা দিলেন। তাঁর অভিনয় যথাযথ। অনিল কাপুরের অভিনয় নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। এয়ার ফোর্সের অফিসারের ভূমিকায় তিনি দুরন্ত। তবে অবাক করা অভিনয় করণ সিং গ্রোভারের। পুলওয়ামা-বালাকোট মানেই অভিনন্দন বর্তমানের কথা মনে পড়ে। করণ সিং গ্রোভারের চরিত্রটিকে সেই ছোঁয়া দিতে চাইলেও বড্ড অগভীর!
শেষপাতে উল্লেখ্য, যুদ্ধবিমানের চেসিং সিকোয়েন্স, হৃতিক-দীপিকার অনস্ত্রিন রসায়ন ছাড়া এই ছবিতে ট্যুইস্ট যদি আশা করেন, তাহলে হতাশ হবেন। সেই এক চেনা গণ্ডিতে দেশপ্রেমকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা।