সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘরের মাঠে প্রায় ভরা গ্যালারির সামনে বেঙ্গালুরু এফসি-কে ১-২ গোলে হারিয়েছে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)।
বুধবার রাজধানীতে পাঞ্জাবের কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে ক্লেটন সিলভারা। কিন্তু এই ম্যাচে গ্যালারিতে থাকবেন না একজন সমর্থকও। সমর্থন না থাকা ভাবাচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতকে (Carles Cuadrat)। যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হবে। এর আগে মোহনবাগানও দর্শকহীন স্টেডিয়ামে খেলেছে।
ইস্টবেঙ্গল-পাঞ্জাব ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবে এলে ফের সুপার সিক্সে ঢুকে পড়বেন ক্লেটন সিলভারা। এদিন চেন্নাই ২-১ গোলে নর্থ ইস্টকে হারানোর ফলে ইস্টবেঙ্গল ছনম্বর থেকে নেমে গিয়েছে সাত নম্বরে। অন্যদিকে চেন্নাই এখন ছনম্বরে। ফলে রাজধানীতে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচটা আসলে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ফাইনাল। বেঙ্গালুরু ম্যাচ জিতে ওঠার পরে ক্লেটন সিলভাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ''আমাদের সামনে তিনটি ম্যাচই ফাইনাল। দুটো ফাইনাল জেতা হয়ে গিয়েছে। আর একটাই ফাইনাল বাকি।''
[আরও পড়ুন: ‘আমি হিসেব রাখি না’, আইপিএলে নয়া রেকর্ড গড়েও ‘অভিমানী’ জাদেজা]
লাল-হলুদ কোচের বিশ্বাস ফুটবলাররা নিজেদের সেরাটা দেবেন। দিল্লিতেই ইস্টবেঙ্গলের সামনে পাঞ্জাব। কলকাতা ছাড়ার আগে কোচ কুয়াদ্রাতকে বলতে শোনা গিয়েছে, “ফাঁকা গ্যালারির সামনে খেলা বেশ কঠিন। এ বার আমরা যতগুলো অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছি, আমাদের সঙ্গে ছিলেন সমর্থকরা। এই ম্যাচে যেহেতু আমরা কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে নামছি, তাই দলের ফুটবলাররা যথেষ্ট উজ্জীবিত হয়ে মাঠে নামবে। আশা করি, ম্যাচে এর প্রভাব পড়বে। গোটা ম্যাচেই ওরা উজ্জীবিত হয়ে থাকবে।”
বেঙ্গালুরু ম্যাচ জেতার পরে মঙ্গলবার অনুশীলনে নামেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ বলেন, “আগের ম্যাচের পরে আজই প্রথমবার আমরা অনুশীলন করলাম। বুধবার যে মাঠে খেলা, সেখানে এখনও নামতে পারিনি। তবে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে নামার আগে আমরা যথেষ্ট ইতিবাচক। তিন পয়েন্টের জন্য আমরা নামব। ছেলেরা উজ্জীবিত হয়ে খেলছে। ওরা প্লে-অফে খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।”
পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে গোলকিপার প্রভসুখন গিল ও মিডফিল্ডার সৌভিক চক্রবর্তীকে পাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদের হেডস্যর বলেন, “গিল, সৌভিক গোটা মরশুমেই ভাল পারফরম্যান্স করেছে। তাই ওদের অভাব অনুভব করব। তবে ওদের জায়গায় যারা খেলবে, তারা নিশ্চয়ই নিজেদের সেরাটা তুলে ধরবে। আমাদের আরেকজন গোলকিপারদের কাছে বড় সুযোগ। যেই খেলুক, সে সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে।''
পাঞ্জাব এফসির প্লে অফে পৌঁছনোর আর কোনও আশাই নেই। তাই পাঞ্জাব চাপমুক্ত হয়েই খেলবেন বলে মনে করছেন কুয়াদ্রাত। ইস্টবেঙ্গল কোচ বলেন, “প্লে অফের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছে পাঞ্জাব। তাই ম্যাচ জেতার তাগিদ ওদের নেই। ম্যাচটা উপভোগ করবে ওরা। এতে সমস্যায় পড়তে পারি আমরা।''
মরশুমের শুরুতে দায়িত্ব নিয়ে কুয়াদ্রাত বলেছিলেন, কোচিং জীবনের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন তিনি। মরশুমের শেষে এসে আইএসএল বিজয়ী কোচের বক্তব্য, “যখন আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন জানতাম কাজটা কঠিন হবে।মরশুমের শেষে এসে মনে হচ্ছে, অনেক কিছুই ঘটেছে, যা আমি চেয়েছিলাম। তবে ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে ক্লাবের অবস্থান যেখানে ছিল, সেই জায়গায় ক্লাবকে আবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য এখনও অনেক পথ বাকি আছে। ক্লাবকে ভারতীয় ফুটবলের সেরা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। এখন আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছি।”
মরশুমের প্রায় শেষ লগ্নে এসে পৌঁছেছে ইস্টবেঙ্গল। কুয়াদ্রাত বলছেন, ''চলতি মরশুমে ৩২টা ম্যাচ খেলে ফেলেছি আমরা। তার প্রায় অর্ধেক জিতেছি আমরা। আগের চেয়েও ধারাবাহিকতা বেশি। কোনও মরশুমে ১৫টা ম্যাচ জেতার অর্থ পারফরম্যান্স খারাপ নয়। পয়েন্ট অর্জন করার মতো খেলতে পারছি। ট্রফিও জিতেছি। প্রিয় দলের জন্য সমর্থকরা এখন গর্বিত হতেই পারেন।”