সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চুরির দায়ে ধরা পড়েছিলেন তাঁরা। সেই অপরাধেই তাঁদের দেওয়া হল আঙুল কেটে নেওয়ার শাস্তি! ইরানের (Iran) এই ঘটনা ঘিরে উত্তেজিত মানবাধিকার সংস্থার কর্মীরা। বিশ্বের কাছে তাঁরা আবেদন করছেন, এই শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই শাস্তি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। দোষীদের নানা জেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে শাস্তি দেওয়ার জন্য।
ইসলামিক দেশগুলিতে শরিয়ত আইনে আঙুল কেটে (Amputataion) নেওয়ার শাস্তি দেওয়া অবশ্য নতুন নয়। যদিও ১৯৭৯ সালের পরে এই আইন কিছুটা সংশোধন করা হয়। তারপর থেকে আঙুল কেটে নেওয়ার শাস্তি দেওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছে। তবে একেবারে বন্ধ হয়নি।পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, তারপরও ৩৫৬টি অপরাধে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ইরানের আইন অনুযায়ী, ডান হাতের চারটি আঙুল কেটে নেওয়া হবে তাঁদের। ইরানের মানবাধিকার সংস্থা আবুদ্দরহমান বরোমান্দ সেন্টারের তরফে বলা হয়েছে, এমন নিষ্ঠুর সাজা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে।
[আরও পড়ুন: পাক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে, ভারতকে আশ্বাস তালিবানের]
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা (Human Rights Organisation) অ্যামনেস্টির তরফে বিশ্বের সব দেশের কাছে আবেদন করা হয়েছে, কূটনৈতিক ভাবে পদক্ষেপ করে এই শাস্তি বন্ধ করা দরকার। এই সংস্থার মধ্য প্রাচ্যের দায়িত্ত্বে থাকা ডায়ানা ইলথাবি বলেছেন, ” ইরানের ফৌজদারি আইনে আঙুল কেটে নেওয়ার মতো অত্যাচারকে মান্যতা দেওয়া হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে এই ধরনের অত্যাচারকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। এইভাবে শাস্তি দেওয়াকে ন্যায়বিচার বলে মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি আরও বলেছেন, “ইরান সরকারের উচিত অবিলম্বে আঙুল কেটে নেওয়ার নির্দেশ প্রত্যাহার করা। আবার বিচার করে অপরাধীদের অন্য কোনও শাস্তি দেওয়া। “
ফরাসি বিপ্লবের সময়ে ব্যবহার হত গিলোটিন। যার সাহায্যে খুব তাড়াতাড়ি মানুষের মাথা কেটে দেওয়া হত। সেই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করেই আঙুল কাটা হয় ইরানে। এই যন্ত্র কার্যকর হলেই আঙুল কেটে নেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ দাবি করছেন ডায়ানা। তিনি বলেছেন, “এই শাস্তি আটকাতে গোটা বিশ্বের সাহায্য প্রয়োজন। ইরানের কর্তৃপক্ষকেও অমানবিক শাস্তি নিষিদ্ধ করতে হবে। ইরান সরকারের এই বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না।”