সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আধ্যাত্মিক পথে সবচেয়ে কম বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হল মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। ওই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জৈন ধর্ম মতে ‘সান্থারা’ পালন করে মৃত্যু হয় শিশুটির। মাত্র তিন বছর বয়সে বিনয়া জৈন সর্বকনিষ্ঠ সান্থারা পালনকারী বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার ওই শিশুর পরিবারের তরফে মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। এদিকে সবচেয়ে কম বয়সে সান্থারা মেনে মৃত্যুবরণ করে গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম উঠেছে বিনয়ার।
কিন্তু কেন এত কম বয়সে মৃত্যুবরণ? ইন্দোরের বাসিন্দা তিন বছরের বিনয়ার ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। এরপর একাধিক জায়গায় তার চিকিৎসা করা হয়। মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে অপারেশনও হয়। সাময়িকভাবে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও পরে শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। এরপর ওই শিশুর মা-বাবা এক জৈন গুরুর সঙ্গে দেখা করেন গত ২১ মার্চ। সেখানেই ধর্মীয় রীতি পালনের মধ্যে দিয়ে ওই শিশুর মৃত্যু পালনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
অসুস্থ বিনয়ার মা-বাবা দু’জনেই তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরের কর্মী। বিনয়ার মা বলেন, “দিনদিন বিনয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। এমন সময় রাজেশ মহারাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তিনিই সান্থারা পালনের পরামর্শ দেন। এরপরই পরিবারের সম্মতিতে সান্থারা পালন করার সিদ্ধান্ত নিই। এই রীতি পালনের দশ মিনিটের মধ্যে বিনয়ার মৃত্যু হয়।”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সান্থারাকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে রাজস্থান হাই কোর্ট। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা অনুযায়ী এই পদ্ধতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অপরাধ বলে জানানো হয়। আদালতের এই নির্দেশের পরেই জৈন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়। তাঁরা যুক্তি দেয় আত্মহত্যা পাপ, কিন্তু সান্থারা একটি ধর্মীয় রীতি। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের নির্দেশ স্থগিত করে।
কিন্তু কী এই সান্থারা? জৈন ধর্মে ব্যবহৃত একটি রীতি সান্থারা। ইচ্ছাকৃত উপবাসের মাধ্যমে মৃত্যুর পথ অবলম্বন করা হয়। যাঁরা সান্থারা গ্রহণ করেন তাঁরা স্বেচ্ছায় খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেন। এরপরই ধীরে ধীরে তাঁরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যান।
