ইক্য়ুইটি-ভিত্তিক থেকে শুরু করে ব্যালেন্সড অ্যাডভান্টেজ ফান্ড। নানা ধরনের হাইব্রিড ফান্ড রয়েছে বাজারে। হালে এই ফান্ডগুলির প্রতি লগ্নিকারীদের আগ্রহও বেশ বেড়েছে। তাই এই বিষয়ে আলোকপাত করলেন কর্পোরেট ট্রেনার জয়দীপ সেন।
সাধারণত আমরা দেখতে পাই লগ্নিকারীরা নিজেদের অ্যালোকেশনের সিংহভাগই শুধুমাত্র ইক্য়ুইটি ফান্ড অথবা শুধুমাত্র ডেট ফান্ড ব্যবহার করে করেন। এই ফান্ডগুলোর ধরন-ধারণ খুব পরিষ্কার। তবে এত সত্ত্বেও, হাইব্রিড ফান্ডের যে নিজস্ব এক জাতীয় অ্যাপিল আছে তা বোঝা শক্ত নয়। ইক্য়ুইটি-ভিত্তিক : ছয়টি শ্রেণির হাইব্রিড ফান্ডের কথা বলেছে সেবি। এই ক্ষেত্রে আছে অ্যাগ্রেসিভ হাইব্রিড, যেখানে ইক্য়ুইটি অ্যালোকেশন ৬৫% থেকে ৮০% হতে পারে। শুধুমাত্র ইক্য়ুইটি নির্ভর ফান্ড থেকে তাই এটি এক ধাপ নিচে। খেয়াল রাখুন, ফান্ডের পোর্টফোলিওয় যদি ৬৫% বা তার বেশি ইক্য়ুইটিতে থাকে, সেটির ক্ষেত্রে ইক্য়ুইটি ট্যাক্সেশনের নিয়ম ধার্য হয়।
এছাড়া আছে ডাইনামিক অ্যাসেট অ্যালোকেশন অথবা ব্যালেন্সড অ্যাডভান্টেজ ফান্ড। সেবির নীতি অনুযায়ী এখানে ইনভেস্টমেন্টের পরিচালনা “ডাইনামিক” কৌশল মেনে করা হয়। সাধারণত আংশিকভাবে “হেজ” করার স্ট্র্যাটেজি নেওয়া হয়। এর জন্য সংশ্লিষ্ট ফান্ড ম্যানেজাররা বিশেষ কিছু কৌশল নেন।
অন্যদিকে আছে মাল্টি অ্যাসেট ফান্ড। এখানে অন্ততপক্ষে তিনটি অ্যাসেটের শ্রেণিতে বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। নূন্য়তম ১০% প্রতিটির জন্য রাখতেই হয়। এই জাতীয় পোর্টফোলিওতেও দেখা যায় ইক্য়ুইটির ভাগ ৬৫% বা তার বেশি আছে, তাতে ইক্য়ুইটি ট্যাক্সেশনের সুবিধা পাওয়া সম্ভব হয়। কিছু অ্যালোকেশন করা হয় ডেট এবং গোল্ডে, হয়তো অন্য কিছু অ্যাসেটেও আংশিকভাবে বিনিয়োগ করা হয়।
ফিক্সড ইনকাম ভিত্তিক কনজারভেটিভ হাইব্রিডের ক্ষেত্রে ইক্য়ুইটির অংশ কিন্তু কম, ১০% থেকে ২৫% সাধারণত। এখানে ডেট নির্ভরতাই মূল আকর্ষণ। এই জাতীয় প্রকল্পের মধ্য়ে আরবিট্রেজ ফান্ডের কথা উল্লেখ করতে চাই। এগুলোর ভূমিকা সম্প্রতি বিশেষভাবে অনুভূত হচ্ছে। এক শ্রেণির লগ্নিকারীর জন্য এমন কৌশল বেশ প্রাসঙ্গিক। তবে প্রতিবারের মতো, এখানও নিজের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা অনুযায়ী বিনিয়োগ করা উচিত। এও বলে রাখি, ট্যাক্সেশনের নিয়ম খুব পরিষ্কারভাবে বুঝে নেওয়া দরকার। যদি কোনও পোর্টফোলিওয় ইক্য়ুইটির অংশ ৬৫% হয় (বা তার বেশি) তাহলে ইক্য়ুইটি ট্যাক্সেশন প্রযোজ্য। সব ধরনের লগ্নিকারীর কাছেই যে ইক্য়ুইটি ট্যাক্সেশন গ্রহণযোগ্য হবে, এমন কিন্তু নয়। প্রকল্পের খুঁটিনাটি বুঝে নিতে হবে, তাতে লগ্নিকারীদেরই সুবিধা, বলা বাহুল্য।
মনে রাখতে হবে যে ইনডেক্সেশন বেনিফিট এখন আর ডেট ফান্ডের ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। দুই বছর হল নিয়ম বদলেছে। এই মুহূর্তে হাইব্রিড নজর কাড়ছে, লগ্নিকারীরা এই জাতীয় প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়াচ্ছেন। হালে আমরা দেখেছি যে মাল্টি অ্যাসেট পোর্টফোলিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তিনটি (বা তার বেশি সংখ্যক) অ্যাসেটে বিনিয়োগ করে ডাইভারসিফিকেশনের সুযোগ নিচ্ছেন পরিচালকরা। রিস্ক-অ্যাডজাস্টেড রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে ইনভেস্টদের।