হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: এবছরের মহাকুম্ভ সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বে। বিভিন্ন দেশ থেকে সাধু-সন্ত ও পুণ্যার্থীরা প্রয়াগরাজে এসেছেন মোক্ষলাভের উদ্দেশ্যে। বিশ্বের সব থেকে বড় এই ধর্মীয় সমাবেশে মহিলাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। 'মাতৃশক্তির আরাধনা'র অন্যতম নিদর্শন হয়ে উঠেছে ত্রিবেণী সঙ্গম ও আখড়াগুলো। মহাকুম্ভের আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখেননি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। প্রথমবার মহিলাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে আলাদা ক্যাম্পের। এছাড়া পরবর্তী অমৃতস্নানের আগে নজির গড়ে দীক্ষা নেবেন হাজারের কাছাকাছি তপস্বিনী।
আগামী ২৯ জানুয়ারি মৌনী অমাবস্যা। যা মাঘী অমাবস্যা নামেও পরিচিত। এদিন অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় অমৃতস্নান। তার আগে ২৭ জানুয়ারি দীক্ষা নেবেন তপস্বিনীরা। এবছর সব মিলিয়ে ১০ হাজার আখড়া তৈরি হয়েছে মেলা প্রাঙ্গনে। সেখানকার শ্রী পঞ্চ দশনম জুনা আখড়ার সাধিকা দিব্যা গিরি জানান, তাঁদের আখড়ায় সেদিন ২০০ জনেরও বেশি তপস্বিনী দীক্ষা গ্রহণ করবেন। অন্যান্য আখড়া হিসাব করলে সেই সংখ্যাটা হাজার পেরিয়ে যাবে। তাঁর কথায়, গভীর আত্ম উপলব্ধির জন্য যে আধ্যাত্মিক পথের প্রয়োজন। এই পথই হল দীক্ষা। কিন্তু এই সাধনার পথ সহজ নয়। তবে এই কঠিন রাস্তায় হাঁটতে প্রস্তুত মহিলারা। তাঁদের অন্যতম রাধেনন্দ ভারতী। গুজরাটের কালিদাস রামটেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতে পিএইচডি করেন তিনি। কিন্তু ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান হয়েও আধ্যাত্মিকতার মোহে তিনি পার্থিব বন্ধন ত্যাগ করেন। গত ১২ বছর ধরে গুরুরসেবা করছেন। এখন সন্ন্যাস গ্রহণ করতে প্রস্তুত তিনি।
দিব্যা গিরি আরও জানান, শ্রী পঞ্চ দশনম জুনা আখড়ায় নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নাম পরিবর্তন করে সন্ন্যাসিনী শ্রী পঞ্চ দশনম জুনা আখড়া রাখা হয়। এই স্বীকৃতি সত্যিই আনন্দের। জানা গিয়েছে, দীক্ষা নেওয়ার জন্য এখনও রেজিস্ট্রেশন এখনও চলছে। এই দীক্ষা অনুষ্ঠান মহাকুম্ভের অন্যতম মাইলফলক হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার মহাকুম্ভে আসেন ১০ দেশের ২১ জন প্রতিনিধি। সেই দল আখড়া পরিদর্শন করার পাশাপাশি ডুব দেয় ত্রিবেণী সঙ্গমে। পাশাপাশি সমস্ত আয়জনের জন্য যোগী আদিত্যনাথের ভূয়সী প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁরা।