সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে তাইওয়ানে! গত কয়েক মাস ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে চিনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। বহুবার সেগুলো তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনেও ঢুকে পড়েছিল। জলসীমায় তৎপরতা দেখা গিয়েছে চিনা রণতরীও। লালফৌজের এই অনুপ্রবেশ ও আগ্রাসানে বেজায় ক্ষিপ্ত তাইপেই। উত্তেজনার পারদ চড়ছে দুদেশের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার গা জোয়ারি 'ড্রাগনে'র। তাইওয়ানের জল এবং আকাশসীমার কাছে নতুন করে 'যুদ্ধ মহড়া' শুরু করেছে চিনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। পালটা সেনা মোতায়েন শুরু করেছে তাইওয়ানও।
জানা গিয়েছে বুধবার এক বিবৃতি দিয়ে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, 'যুদ্ধের উসকানি দিয়ে ফের মহড়া শুরু করেছে চিনের ফৌজ। তাইওয়ান প্রণালীর দক্ষিণ উপকূলের বিমানবাহী রণতরী এবং অন্তত ৪৫টি যুদ্ধবিমান নিয়ে মহড়া শুরু করেছে চিন। বেজিংয়ের এই একতরফা পদক্ষেপে বাণিজ্যিক উড়ান ও জাহাজ চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।' এনিয়েও পালটা বিবৃতি দিয়েছে বেজিংও। তাইওয়ানের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করে সেদেশের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, 'প্রশিক্ষণের জন্য এই মহড়া চলছে।'
বলে রাখা ভালো, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথমবার তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করে জাপানের যুদ্ধজাহাজ। প্রশ্ন ওঠে চিনকে চোখ রাঙিয়েই কি নয়া কৌশল নিয়েছে কোয়াড জোট? ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও আমেরিকা মিলে তৈরি হয়েছে ‘কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’ বা কোয়াড গোষ্ঠী। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এই জোটের একটি সামিটের পরই পূর্ব চিন সাগর থেকে জাপানি নৌসেনার সাজানমি নামে একটি ডেস্ট্রয়ার রণতরী তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করে। সঙ্গে ছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের জাহাজও। এনিয়ে টোকিওর দাবি ছিল, আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিজেদের জাহাজ চলাচলের অধিকারের উপর জোর দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। চিন-তাইওয়ান সংঘাতে আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাইপেইয়ের পাশে রয়েছে জাপান। ফলে তাইওয়ান প্রণালীতে জাপানি যুদ্ধজাহাজের প্রবেশে ক্ষেপে লাল হয় বেজিং। এই পদক্ষেপ তারা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি।
উল্লেখ্য, বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে এসেছে চিন। তবে বেজিংয়ে ক্ষমতার রাশ শি জিনপিংয়ের হাতে আসার পর থেকেই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে কমিউনিস্ট দেশটি। একাধিকবার জোর করে তাইওয়ান দখলের কথাও বলেছেন প্রেসিডেন্ট শি। তার পর থেকেই আরও সতর্ক হয়ে গিয়েছে তাইওয়ান। লালফৌজের হামলা ঠেকাতে সামরিক বাহিনীকে অত্যাধুনিক হাতিয়ারে সাজিয়ে তুলছে তাইওয়ান। নিজেদের মাটিতেই শক্তিশালী সাবমেরিন তৈরি করেছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।
