সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজাকে কেন্দ্র করে চরম আকার নিয়েছে ইজরায়েল ও ইরান সংঘাত। সেই আবহেই মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এক যুবককে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিল তেহরান। জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম মোসেন ল্যাংরানশিন। অভিযোগ, গত ২ বছর ধরে ইরানের পরমাণু গবেষণা সংক্রান্ত গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগ ছিল ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
ইরানের বিচার বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ২০২২ সালে রিভলিউশনারি গার্ড কর্ণেল সাইদ খোদাইয়ের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল মোসেনের বিরুদ্ধে। এছাড়া ইরানের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কেন্দ্র ইসফাহানে হামলায় সহযোগিতার অভিযোগ তোলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ইরানের পরমাণু সংক্রান্ত বহু গোপন তথ্য ইজরায়েলকে ফাঁস করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বিচার বিভাগের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে এই সমস্ত অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে মোসেন। যার জেরেই ইরানের আইন অনুযায়ী গুপ্তচরবৃত্তির শাস্তি স্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ওই যুবককে।
এদিকে এই মৃত্যুদণ্ড এমন একটি সময়ে কার্যকর করা হয়েছে যখন আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে ইরানের। আমেরিকা চায় অতীতের চুক্তি বাতিল করে নতুন করে পরমাণু চুক্তি করতে। এই চুক্তি নিয়ে ওমানে ইরান-আমেরিকা তৃতীয় দফার আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার কোনও রকম পরমাণু চুক্তিতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি চান ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে। এই ইস্যুতে ইরানের বিদেশমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, ওয়াশিংটনের মধ্যে তেহরানের চলা পারমাণবিক চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা ব্যাহত করার চেষ্টা করছে ইজরায়েলের। এহেন ডামাডোলের মাঝেই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যুবককে প্রকাশ্য ফাঁসি দেওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ বছর ধরে ছায়া যুদ্ধ চলছে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে। ইরান দাবি করে, তাঁদের একাধিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে মোসাদ। শুধু তাই নয়, ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক কর্মসূচি ক্ষেত্রগুলিতে হামলা চালানোর নেপথ্যেও রয়েছে ইজরায়েল। মোসাদের চর ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এর আগেও অসংখ্য মানুষকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান।
