সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও ভেসে আসছে মহিলাকণ্ঠের কাতর আর্জি, 'বাঁচাও, বাঁচাও।' কখনও আবার শোনা যাচ্ছে ছোট্ট শিশুর কান্নার আওয়াজ। এমন আর্তনাদ শুনলে যে কেউ বাড়ির বাইরে আসবেন। কিন্তু এই আওয়াজ যে আদতে 'যমদূতের ডাক'। কারণ গাজায় এবার এমনই ড্রোন ব্যবহার করছে ইজরায়েল! যার থেকে এই ধরনের শব্দ বেরিয়ে আসে। যা শুনে ক্যাম্প বা শরণার্থী শিবির থেকে বেরিয়ে এলেই নেমে আসবে 'মৃত্যুবাণ'। এমনই দাবি কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার।
এক বছর পেরিয়ে গেলেও গাজায় থামেনি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ (Israel-Hamas Conflict)। হামাস নিধনে হামলা জারি রেখেছে ইজরায়েল। গাজায় মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ৪৪ হাজার। বলি নিষ্পাপ শিশুরাও। আল জাজিরার রিপোর্ট অনুযায়ী, এবার গাজায় বিশেষ ধরনের ড্রোন ব্যবহার করছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। এই ড্রোনগুলোই এখন ঘুরে বেরাচ্ছে শরণার্থী শিবির বা প্যালেস্তিনীয়দের বাড়ির সামনে। ভেসে আসছে মহিলার আওয়াজ কিংবা শিশুর কান্না। জানা গিয়েছে, ওই ড্রোনগুলো মূলত ‘কোয়াডকপ্টার’। রিমোট দ্বারা পরিচালিত। নজরদারি চালাতে, নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বস্তুকে টার্গেট করতে অথবা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার কাজে এর ব্যবহার করে ইজ়রায়েলি সেনা।
এনিয়ে মাহা হুসেইনি নামে এক মানবাধিকার কর্মী সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েছেন, প্যালেস্তিনীয়দের বাড়ির বাইরে বের করে আনতে ইজরায়েলি সেনা শব্দ নকল করছে। যে আওয়াজ শুনে অনেকেই বাইরে ছুটে আসছেন। আর ঠিক তখনই তাঁদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলি সেনার তরফে এই বিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি। বলা রাখা ভালো, আইডিএফ বরাবরই অভিযোগ জানিয়েছে, গাজার শরণার্থী শিবির, মসজিদ, স্কুল, হাসপাতালে ঘাঁটি গেড়েছে হামাস জঙ্গি। এর স্বপক্ষে তারা অনেক ছবি, ভিডিও প্রমাণ হিসাবেও তুলে ধরেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা। আন্তর্জাতিক মহলে বারবার তোপের মুখে পড়লেও হামাসকে নিঃশেষ করার লক্ষ্যে অবিচল সেদেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন এই সামরিক অভিযানের ব্যাপক নিন্দা করেছে। গাজার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অবিলম্বে সেখানে যুদ্ধবিরতি চেয়ে বারবার প্রস্তাব পেশ হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। কিন্তু বারবার সেই প্রস্তাব ভেটো দিয়ে আটকে দিয়েছে আমেরিকা। সেই একই ছবি ধরা পড়ে নভেম্বর মাসেও। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি চেয়ে প্রস্তাব পেশ করে ১০ টি দেশ। আলাদা করে দাবি জানানো হয়, দ্রুত মুক্তি দিতে হবে পণবন্দিদের। কিন্তু সেই প্রস্তাবে ফের ভেটো দিয়ে দেয় আমেরিকা।