সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা গাজায়। কিন্তু তা কার্যকর হওয়ার আগেই ইজরায়েলি সেনার হামলায় সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক প্যালেস্তিনীয়। নিহতদের মধ্যে মহিলা ও শিশুও রয়েছে। এমনটাই দাবি গাজার সিভিল ডিফেন্সের। বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও লড়াই থামেনি। হামাস নিধনে রক্তক্ষয়ী অভিযান জারি রেখেছে ইজরায়েল। ফলে ১৫ মাস পর লড়াই থামার সবুজ সংকেত মিললেও তা কতটা কার্যকর হবে সেই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
আল জাজিরা সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার সকালেও মধ্য গাজায় আক্রমণ শানায় ইজরায়েলের বিমানবাহিনী। হামলা চলে দক্ষিণ গাজার আল মাওয়াসির মতো একাধিক শরণার্থী শিবিরে। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা অন্তত ১০১। যার মধ্যে ২৭ জন শিশু ও ৩১ মহিলাও রয়েছে। আহতের সংখ্যাও শতাধিক। এনিয়ে ইজরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মেনাচেম ক্লেইন সংবাদমাধ্যমে বলেন, "ইজরায়েলের সরকার এবং তাদের সামরিক বাহিনী এখনও গাজাযুদ্ধে জয়ের আশা করছে। কিন্তু এখনও তারা তা অর্জন করতে পারেনি। ইজরায়েল যুদ্ধের যে লক্ষ্য সামনে রেখেছিল এবং হামাসের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তার মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে।" এদিকে, ইজরায়েলের দাবি, ক্যাম্প বা শরণার্থী শিবিরগুলোতে হামাস জঙ্গিরা লুকিয়ে এখনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কাতারের মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিন ধরেই ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। অবশেষে সংঘর্ষ থামাতে রাজি হয়েছে দুপক্ষ। তবে বন্দি বিনিময় নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দড়ি টানাটানি হয়েছে ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে। বৃহস্পতিবারও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ করেন, পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার শর্ত স্থির করতে অযথা টালবাহানা করছে হামাস। যদিও সেই অভিযোগ নাকচ করেছে জঙ্গি সংগঠনটি। এখনও চলছে আলোচনা। কিন্তু এর মাঝেও হামলা জারি রয়েছে গাজায়।
বিশ্লেষকদের মতে, দুপক্ষের সম্মতি মতো গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও তা নামেই হবে। কারণ হামাস জঙ্গিদের মোটেই ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন নেতানিয়াহু। যুদ্ধবিরতি চললেও গাজা থেকে নজর সরাবেন না তিনি। ফলে কিছু বেগতিক দেখলেই ফের আগুন ঝরাবে ইজরায়েলি ফৌজ। হামাস জঙ্গিদের পাশাপাশি প্রাণ হারাবে সাধারণ মানুষও। ইতিমধ্যেই গাজায় মৃতের সংখ্যা ৪৭ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে এই মৃত্যুমিছিল থামার কোনও আশা এখনই দেখা যাচ্ছে না।
