সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাণিজ্যচুক্তির মাঝেই এবার ভারতকে বিরাট ধাক্কা আমেরিকার। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যকারী দেশগুলির উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক চাপাবে হোয়াইট হাউস। সম্প্রতি মার্কিন সংসদে এই সংক্রান্ত বিলে অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এই বিল পাশ হলে ভারত ও চিনের বাণিজ্যে বিরাট ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বর্তমানে নিজ দেশের চাহিদা মেটাতে রাশিয়ার ৭০ শতাংশ জ্বালানি তেল কেনে ভারত ও চিন।
সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন রিপাকলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। এবিসি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই বিলের উদ্দেশ্য হল রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলা যুদ্ধ বন্ধ করা। কোনও দেশ যদি রাশিয়ার থেকে পণ্য কেনে তবে তাদের উপর চাপানো হবে এই শুল্ক। আমেরিকা মনে করে, ভারত ও চিনের এই জ্বালানি তেল কেনা রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের 'ব্যাক বোন' হিসেবে কাজ করছে। ফলে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে গ্রাহামের তরফে। তাঁর দাবি অনুযায়ী, আগামী আগস্ট মাসে এই বিল সেনেটে পেশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৮৪ শতাংশ সমর্থন পাওয়া গিয়েছে বিলটির পক্ষে।
উল্লেখ্য, আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পরই রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু'একবার পুতিনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা হলেও এ বিষয়ে খুব একটা সাফল্য মেলেনি আমেরিকার। নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে এই যুদ্ধ থামানোই ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই যে কোনওভাবে ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতেই কোমর বেঁধে নেমেছে আমেরিকা। সেই লক্ষ্যে রাশিয়ার ব্যবসা বন্ধ করে আর্থিকভাবে পুতিনের উপর চাপ সৃষ্টি করতেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে একদিকে যখন ৫০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর তোড়জোড় চলছে, অন্যদিকে তখন ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির একেবারে শেষধাপে পৌঁছে গিয়েছে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন। এ প্রসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় ট্রাম্প জানান, 'আমার মনে হয় আমরা ভারতের সাথে একটি চুক্তি করতে চলেছি। এবং এটি একটি ভিন্ন ধরনের চুক্তি হতে চলেছে। এটি এমন একটি চুক্তি যার ফলে আমরা ভারতের বাজারে প্রবেশ ও প্রতিযোগিতা করতে পারব। ভারত কাউকেই তাদের বাজারে প্রবেশ করতে দেয় না। আমার মনে হয় ভারত আমাদের প্রবেশ করতে দেবে, এবং যদি তারা তা করে, তাহলে আমাদের অনেক কম শুল্কের চুক্তি হবে।' যদিও বিশেষজ্ঞদের অনুমান, যেহেতু ভারত ও আমেরিকার মধ্যে আলাদাভাবে বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে, ফলে ৫০০ শতাংশের শুল্কের খাঁড়া হয়ত নয়াদিল্লির জন্য কার্যকর হবে না।
